দেশের আকাশে মিথেন গ্যাসের হটস্পট মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২১, ০২:১৮ পিএম

মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল্ডকেই মিথেন গ্যাস নিঃসরণের প্রধান উৎস বলা হচ্ছে

মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল্ডকেই মিথেন গ্যাস নিঃসরণের প্রধান উৎস বলা হচ্ছে

প্যারিসভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘কায়রস এসএস’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ১২টি মিথেন নিঃসরণের হার শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশের আকাশে। দেশের বায়ুমণ্ডলে মিথেনের এই উপস্থিতিকে উদ্বেগের বলছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। আর এই মিথেন গ্যাসের অন্যতম প্রধান হটস্পট হয়ে উঠেছে রাজধানীর মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল।

বিশ্বখ্যাত ব্লুমবার্গ নিউজে গত ২৫ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখান বলা হয়, মাতুয়াইল থেকে প্রতি ঘণ্টায় চার হাজার কেজি মিথেন নির্গত হচ্ছে। ব্লুমবার্গ নিউজে আরো উল্লেখ করা হয়, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কোনো এক অংশ থেকে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে ক্ষতিকর ভূমিকা রাখা গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলোর একটা, মিথেন গ্যাসের একটা বিশাল নিঃসরণ চিহ্নিত করা হয়েছে। 


এর আগে এপ্রিলের শুরুর দিকে ‘কায়রস এসএস’ তাদের গবেষণা তুলে ধরে জানায়, বাংলাদেশের বাতাসে ঘন মিথেন গ্যাসের রহস্যজনক ধোঁয়ার উপস্থিতি মিলেছে। এখানকার বায়ুমণ্ডলের ১২টি স্থানে সর্বোচ্চ মিথেন নিঃসরণের হার শনাক্ত হয়েছে। ওই গবেষণার পর সম্প্রতি প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ট্রিয়লভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিএইচজিস্যাটের গত ১৭ এপ্রিলের হুগো স্যাটেলাইটে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল থেকে বিপুল পরিমাণ মিথেন নিঃসরণ হচ্ছে। এর পরিমাণ হতে পারে ঘণ্টায় প্রায় চার হাজার কেজি। প্রতি ঘণ্টায় এক লাখ ৯০ হাজার গাড়ি যে পরিমাণ বায়ুদূষণ ঘটায়, তার সমান দূষণ ছড়াচ্ছে মাতুয়াইলের বিশাল এই ময়লার ভাগাড় থেকে।


এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল্লাহ সিদ্দিক ভুঁইয়া ব্লুমবার্গকে জানান, ১৮১ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার টন বর্জ্য ফেলা হয়। তরল বর্জ্য ও গ্রিনহাউস গ্যাস ব্যবস্থাপনায় এটি জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থ সাহায্য পেয়েছে। তবে সেখানে ঠিক কী পরিমাণ মিথেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষতিকর মিথেন বা পদার্থ বায়ুমন্ডলে থাকা জলকণার সঙ্গে মিশে সালফিউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। সেই অ্যাসিড বৃষ্টির পানির সঙ্গে নেমে এলে তাকে অ্যাসিড রেইন বলে, যা উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। অ্যাসিড রেইন হলে এলাকার জীববৈচিত্র্য যেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তেমনি এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দেবে নানা ধরনের রোগ। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই গ্যাস নিঃসরনের কারণ খুজে বের করে হবে এবং তা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। 


সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh