‘মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল পুলিশি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২১, ০৭:৪৫ পিএম

জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব

জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব

অসংখ্য মানুষের আত্মদান এবং সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল জনগণের রাষ্ট্র কায়েমের জন্য, পুলিশি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

শনিবার (১ মে) জেএসডির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জেএসডি সভাপতি বলেন, বর্তমান সরকার শুধুমাত্র ক্ষমতাকে সংহত করার জন্য রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে না দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। পুলিশি রাষ্ট্র জনবিচ্ছিন্ন সরকারকে সাময়িক নিরাপত্তা দিচ্ছে, কিন্তু জনগণের রাষ্ট্রকে চূড়ান্ত ঝুঁকিতে ফেলেছে। 

তিনি বলেন, নিপীড়নমূলক এ রাষ্ট্র গঠনের জন্য শ্রমিক-কৃষক রক্ত দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেনি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত একটি রাষ্ট্রকে গণবিরোধী রাষ্ট্রে পরিণত করার সকল দায় এ সরকারকেই নিতে হবে।

আবদুর রব বলেন, শ্রমিক সমাজকে রাষ্ট্রীয় রাজনীতি থেকে দূরে রেখে অগ্রগামী সমাজ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে না। তাই শ্রমিক সমাজকেও রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে সাংবিধানিকভাবে অংশীদারিত্ব দিতে হবে।

জেএসডি সভাপতি বলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নিরস্ত্র শ্রমিকের ওপর পুলিশ কর্তৃক নির্বিচারে গুলি করে শ্রমিক হত্যার পর সরকার কোনো প্রকার দুঃখও প্রকাশ করেনি। এমনকি কোনো তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন মনে করেনি, বরং পুলিশ আবার অবৈধ অস্ত্রধারী হিসাবে চিহ্নিত করে হত্যার জন্য শ্রমিকদেরকেই দায়ী করছে। পুলিশি রাষ্ট্র না হলে এত শ্রমিক নিহত এবং আহত হওয়ার পরও সরকারের নিশ্চুপ থাকার কথা নয়।

শ্রমিক জোটের সভাপতি মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহউদ্দিন আহমেদ। 

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে শ্রমিকরা ছাত্র-জনতার সাথে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশেও শ্রমিকদের অধিকার ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না, যা খুবই দুঃখজনক।

সভাপতির বক্তব্যে মোশারফ হোসেন বলেন, সভ্যতার কারিগর শ্রমিকদেরকে নির্বিচারে হত্যা করার সরকারি সংস্কৃতি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রের রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তন করে শ্রম কর্ম পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর অংশীদারিত্বভিত্তিক রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করার মাধ্যমেই মে দিবসের তাৎপর্য লালন করা সম্ভব।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন মন্টুর পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেএসডি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, জেএসডি নেতা মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, তৌহিদ হোসেন, আমিন উদ্দিন বিএসসি প্রমুখ।  

আলোচনা সভার আগে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট এক র‌্যালির আয়োজন করে। র‌্যালি পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেএসডির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন বেলাল, মহানগর জেএসডি নেতা মোশারফ হোসেন ও হাজী আখতার।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh