ফরিদপুরে ডিবি হেফাজতে আসামির মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ মে ২০২১, ০৮:৫০ পিএম

ডিবি হেফাজতে নিহতের পরিবারের আর্তনাদ। ছবি: ফরিদপুর প্রতিনিধি

ডিবি হেফাজতে নিহতের পরিবারের আর্তনাদ। ছবি: ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের সালথায় পুলিশের সাথে উত্তেজিত গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রিমান্ডে থাকাকালীন অবস্থায় এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। 

শনিবার (১ মে) সকাল ৬টায় ডিবি পুলিশের একটি দল ওই আসামিকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

মৃত ওই ব্যক্তির নাম আবুল হোসেন মোল্যা (৪৮)। তিনি সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের গোপালীয়া গ্রামের মৃত ইমানউদ্দিন মোল্যার ছেলে। আবুল হোসেন বিবাহিত এবং দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। 

গত ৫ এপ্রিল রাতে সালথায় সংঘটিত সহিংস ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি হিসেবে গত ১৬ এপ্রিল আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর গত ২৮ এপ্রিল পাঁচ দিনের রিমান্ডে তাকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে এ রিমান্ড চলছিল।

গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনীল কুমার কর্মকার বলেন, আবুল হোসেনের রিমান্ড চলছিল। সকালে তিনি সেহরি খেয়েছেন। এরপর আজ শনিবার ভোর  সোয়া পাঁচটর দিকে তিনি বাথরুমে যান। পরে নিরাপত্তারক্ষী দেখেন বমি করে মেঝেতে লুটিয়ে আছেন আবুল হোসেন। পরে তাকে দ্রুত ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ওই সময় জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছিলেন মো. তোফাজ্জেল হোসেন। তোফাজ্জেল হোসেন জানান, পুলিশ আবুল হোসেনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

আবুল হোসেনের মেয়ে তানিয়া আক্তার (১৮) বলেন, আমার বাবা কোনো অপরাধ করেনি। আমার বাবারে রিমান্ডে নিয়া মাইরা ফেলানো হইছে। আমার বাবা নিরীহ প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তিনি কোনো দল, পক্ষে থাকেন না। তিনি গরুর খামার নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। 

সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. খায়রুজ্জামান বলেন, মৃত আবুল হোসেন একজন নিরীহ ও সৌখিন ধরনের মানুষ ছিলেন। তিনি একটি গরুর খামার করেছেন ওই খামার নিয়েই থাকেন। তিনি রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন।

ফরিদপুর পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) জামাল পাশাকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও তিনি জানান। 


বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের প্রতিবাদ

এদিকে, রিমান্ডে আবুল হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু। তিনি বলেন, আবুল হোসেন একজন সাধারণ কর্মী ছিলেন। তিনি কোনো পদেও ছিলেন না। মিথ্যা মামলায় আটকের পর কিভাবে রিমান্ডে তার মৃত্যু হলো এব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জবাব দিতে হবে। 

প্রসঙ্গত, লকডাউনকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে গত ৫এপ্রিল সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি অফিসে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় দুই যুবক নিহত হন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh