ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২১, ১০:৫৮ পিএম
বিজেপির নেত্রী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনো হারেননি বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির নেত্রী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান টাইমসের এইসময়কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নন্দীগ্রামে মমতার পরাজয় প্রসঙ্গে বৈশাখী বলেন, মমতার হারকে হার হিসেবে দেখছি না। তিনি ২৯৪ আসনেই প্রার্থী। একটা সিটে লড়েছেন। নন্দীগ্রামে গণনায় বিভ্রান্তি হয়েছে, ম্যানিপুলেশনের অভিযোগ উঠেছে। নন্দীগ্রামের সংগ্রামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত তিনি। তারা আদালতে যাবে বলেছে, সুতরাং আদালত যতক্ষণ না কোনো রায় দিচ্ছে, ততক্ষণ সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে এটাকে হার হিসেবে মানছি না। কিন্তু নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে লড়েছেন, এই সিদ্ধান্তই তাকে জয়ী করেছেন। হয়তো আবেগের সিদ্ধান্ত। আবেগের অপর নাম মমতা।
এবারের নির্বাচনের আগে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়ে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। যদিও তিনি নির্বাচনে জিততে পারেননি।
নির্বাচনের ফলের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সুর বদল করলেন বৈশাখী। ফল ঘোষণার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার ও শোভনবাবুর পক্ষ থেকে অনেক অভিনন্দন। উনি সুশাসক। তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
তৃণমূলে ফেরা প্রসঙ্গে বৈশাখী বলেন, রাজনীতিতে সম্ভাবনার শিল্প। আগামী দিনে কী করতে চলেছি, তা সকলেই জানতে পারবেন। শোভনবাবু একমাত্র নেতা, যিনি তৃণমূল ছড়ার পর দিনই বিজেপিতে যোগদান করেননি। তৃণমূল ছেড়েছিলেন আদর্শ-নীতির ভিত্তিতে। বিজেপিকে বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু সুষ্ঠু কাজ করার পরিবেশ পাননি, তাই সরে এসেছেন। শোভনবাবু সিদ্ধান্ত নেন নীতি আদর্শের ভিত্তিতে। শোভনবাবু আবেগের মানুষ। তাই তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতে সমর্থন করব। মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছি না।
বৈশাখী বলেন, মানুষ যাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছেন, তাদের অভিনন্দন। মানুষের রায় শিরোধার্য। যে মার্জিনে উনি জিতেছেন, অসুস্থ অবস্থায় জিতেছেন, সেটার জন্য তাকে অভিবাদন।
মমতার প্রশংসায় বৈশাখী বলেন, মমতার কাছে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞ, শোভনবাবু মন্ত্রী ছাড়ার পরও তিনি কিন্তু একবারও মনে করেননি শোভন বিজেপিতে গিয়েছেন বলে নিরাপত্তা তুলে নেবেন। মমতা সুশাসক। দলনেত্রী তো গড়েন, ভাঙেন তো না। গড়ার লক্ষ্যে যা যা করণীয় করেছেন। শোভনবাবু ফিরে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা করছেন বলে খবর নেই। ফিরে যাওয়ার জায়গা সংকুচিত হয়েছে।
বৈশাখী পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভরাডুবির কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। বৈশাখী বলেন, বিজেপি কর্মীদের সততা নিয়ে সন্দেহ নেই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ নেই। বাংলায যারা মাথা ছিলেন, তারা গ্রাউন্ড রিয়েলিটির থেকে অনেকটা দূরে ছিলেন। কর্মীদের কোন পথে পরিচালনা করলে জয় আসবে, সেদিকে বিজেপি নেতারা ওভারলুক করায় অঘটন করেছেন। ভুল প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। তৃণমূলের নেতাদের বিজেপিতে এনেছেন। গ্যাসবেলুনকে হাওয়া দিলেই রকেট হয়ে যাবে সেটা তো হতে পারে না। বেড়ালকে বাঘ বানানোর কারণেই বিজেপির খারাপ ফল।