মেধাসম্পদ এবং কোভিড-১৯

মারিয়ানা মাজোকাতো, জয়তী ঘোষ ও এলস টরেল

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২১, ০৯:০২ এএম

অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার প্রযুক্তির এক আশ্চর্য কীর্তি। ফাইল ছবি

অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার প্রযুক্তির এক আশ্চর্য কীর্তি। ফাইল ছবি

অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার প্রযুক্তির এক আশ্চর্য কীর্তি। এই আবিষ্কার দেখিয়ে দিয়েছে- মানুষের উদ্ভাবনসক্ষমতা, বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের সঙ্গে প্রাথমিক গবেষণা থেকে শুরু করে বড় আকারের ভর্তুকির মতো সহায়তার মাধ্যমে কতটা মানবকল্যাণকর কিছু সৃষ্টি হতে পারে। 

তবে এই ভ্যাকসিন যদি সবার মধ্যে সমানহারে বণ্টন না করা হয়, তাহলে এ উদ্ভাবন ব্যর্থ হতে বাধ্য। সহজপ্রাপ্য না হয়ে উঠলে জনস্বাস্থ্য সুবিধাগুলো সাধারণত খুব একটা কার্যকর হয় না। টিকার সিংহভাগই হাতেগোনা কয়েকটি ধনী দেশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং মহামারিতে বিশ্বের একটি বড় অংশ এখনো অরক্ষিত হয়ে রয়েছে। এই বৈষম্য হ্রাস না হলে মহামারি আরও দীর্ঘমেয়াদি হবে। বিভিন্ন স্থানে এরই মধ্যে নতুন ভাইরাসটির রূপান্তর ঘটেছে, যা এই রোগ নিয়ন্ত্রণের অগ্রগতিকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। 

এ সমস্যার সমাধান কী হতে পারে? বলা হচ্ছে, সবার কাছে ভ্যাকসিনটি সহজপ্রাপ্য করে দেওয়াই জরুরি এখন। আর এভাবে নৈতিক, স্বাস্থ্যগত এবং অর্থনৈতিক ধস সৃষ্টিকারী ‘ভ্যাকসিন বর্ণবাদের’ নিষ্পত্তি হবে। বর্তমানে ভ্যাকসিনের যে সংকট দেখা যাচ্ছে, তা মূলত কৃত্রিমভাবে তৈরি এবং সমাধানযোগ্য। বিশ্ব যদি মেধাসম্পদ দাবির ঘোরটোপে না পড়তো, তাহলে প্রচুর ভ্যাকসিন উৎপাদন করা সম্ভব হতো এবং চলতি বছর বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছাতো। শুধু তাই নয় আগামী বছরের মধ্যে বিশ্বের সবার কাছেই ভ্যাকসিন সহজলভ্য হয়ে উঠতো। 

ধনী দেশগুলোর ভ্যাকসিন মজুদ রাখা এবং ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রযুক্তি কুক্ষিগত করে রাখার কারণে বর্তমানে ভ্যাকসিনের অভাব তৈরি হয়েছে। প্রযুক্তি ও কৌশল জানা থাকলে কানাডা থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোম্পানি কোটি কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম হতো। প্রযুক্তি বিনিময় করা হলে গত বছর মডার্না ও ফাইজারের মতোই অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারারাও এই টিকা তৈরি করতে পারতো এবং ধনী দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমতো। বিশ্বের এই জরুরি অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য প্রযুক্তির ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না। যদিও ওষুধ কোম্পানিগুলো দাবি করছে তারা টিকার উৎপাদন আরও বাড়াতে পারবে।

  • ধনী দেশগুলোর ভ্যাকসিন মজুদ রাখা এবং ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রযুক্তি কুক্ষিগত করে রাখার কারণে বর্তমানে ভ্যাকসিনের অভাব তৈরি হয়েছে। প্রযুক্তি ও কৌশল জানা থাকলে কানাডা থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোম্পানি কোটি কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম হতো। প্রযুক্তি বিনিময় করা হলে গত বছর মডার্না ও ফাইজারের মতোই অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারারাও এই টিকা তৈরি করতে পারতো এবং ধনী দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমতো। বিশ্বের এই জরুরি অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য প্রযুক্তির ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না

তবে তাদের এ দাবির বিষয়টিও এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। কারণ ধনী দেশগুলোর অগ্রাধিকারের বাজারগুলোতে তারা অতিমাত্রায় এবং নিম্নমানের টিকা সরবরাহ করেছে। ব্রিটিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং মার্কিন কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন উভয়েই উৎপাদনগত চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে কোম্পানি দুটি। অন্যদিকে অন্য দুই ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি মডার্না ও ফাইজার মূলত নিজ দেশেই টিকা সরবরাহ করছে। তাদের তৈরি টিকা খুব অল্প কিছু জায়গায় সরবরাহ করা হয়। 

অথচ বিশ্বের সব মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়া প্রতিটি দেশ ও সংগঠনের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে; কিন্তু সক্ষম দেশগুলোর দিকে তাকালে স্বার্থপরতার চিত্র আমাদের সামনে চলে আসছে। 

ধনী দেশগুলো সর্বপ্রথম নিজেদের দেশের সব জনগণকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার কৌশল অনুযায়ী চলছে। অথচ বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোয় টিকা সরবরাহে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্ততপক্ষে ধনী দেশগুলোকে কোনোভাবেই দ্রুত ও সমন্বিতভাবে বৈশ্বিক টিকা প্রদান কার্যক্রমে প্রতিবন্ধক হয়ে ওঠা যাবে না। এ ছাড়া অন্যান্য দেশ যারা নিজেরাই টিকা তৈরি করতে চাচ্ছে তাদেরও বাধা দেওয়া যাবে না। 

টিকার কৃত্রিম মেধাসম্পদ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বিনিময় করা কতটা জটিল বিষয়, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এক্ষেত্রে প্যারেন্ট কোম্পানিগুলো বড় ধরনের বাধা হিসেবে কাজ করছে। কারণ তারা শুধু নিজেদের ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিগুলোকেই প্রয়োজনীয় উৎপাদনের জন্য কৃত্রিম মেধাসম্পদ একচেটিয়াভাবে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে। যা কেবল নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত হবে এবং তাদের দেওয়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এসব টিকা সরবরাহ করা হবে। 

কৃত্রিম মেধাসম্পদের বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (টিআরআইপিএস) নামক চুক্তির আওতায় পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটি দল তাদের প্রস্তাবের কেন্দ্রবিন্দুতে কোভিড-১৯ কে বিশেষ পরিস্থিতি হিসেবে দেখার অনুরোধ করেছে। এসব দেশের পক্ষ থেকে কৃত্রিম মেধাসম্পদ আইনে বিশেষ ছাড় দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। যাতে করে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সরবরাহে প্যাটেন্ট প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃত্রিম মেধাসম্পদ আইন অনুযায়ী তাদের কোনো বাধার মুখে না পড়তে হয়।

অনেকে বলছেন, ট্রিপস (TRIPS) চুক্তিতে এরই মধ্যে এমন কিছু ধারা (যেমন- উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে এমন দেশগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে লাইসেন্স দেওয়া) যুক্ত করা হয়েছে- যা প্যাটেন্টের নিয়মে অনেকটাই শিথিলতা এনেছে। তবে এ সুবিধার প্রয়োগের সুযোগ খুব সীমিত এবং সময়সাপেক্ষ। এ অবস্থায় ট্রিপস (TRIPS) চুক্তিতে ছাড় দেওয়া হলে, তা প্রযুক্তি স্থানান্তরের দ্বার উন্মোচন করবে। ফলে যে কোনো দেশ অপেক্ষাকৃত কম খরচে ভ্যাকসিন উৎপাদন অথবা আমদানি এবং বণ্টন করতে পারবে। শুধু তাই নয় এতে করে ধনী দেশগুলোর সৃষ্ট বাণিজ্য বিবাদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে দরিদ্র দেশগুলো। 

এদিকে বৈশ্বিক আর্থিক পরিস্থিতিও এখন ভয়াবহ। অনেক দেশেরই নিজেদের জনসাধারণের সবার জন্য ভ্যাকসিন জোগাড়ের সামর্থ্য নেই। ভ্যাকসিনের জন্য প্রতিযোগিতা, দরকষাকষির ক্ষমতার সংকট এবং ভ্যাকসিনের নির্ধারিত মূল্যের ব্যাপক ব্যবধানের (প্রতি ডোজ ২ থেকে ৪০ ডলার পর্যন্ত) এসব দেশের জন্য ভ্যাকসিন মোটেও সহজলভ্য নয়। আর এ সমস্ত বিষয়ে সক্ষমতা থাকার কারণে ধনী দেশগুলো দরিদ্রদের তুলনায় কম মূল্যে ভ্যাকসিন ক্রয় করতে পারে। 

অ্যাস্ট্রাজেনেকা কমমূল্যে ভ্যাকসিন বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিলেও দেখা গেছে, অঞ্চলভেদে তাদের উৎপাদিত ভ্যাকসিনের দামও ভিন্ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় কোম্পানিটির ভ্যাকসিনের দাম বাংলাদেশ, উগান্ডা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে কম। অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক মনোভাবাপন্ন কোম্পানিগুলো ভ্যাকসিনের দাম আরও বৃদ্ধি করতে পারে। ফাইজার জানিয়েছে, মহামারির ভয়াবহতা কমে আসলে ভ্যাকসিনের দাম বৃদ্ধি করবে তারা। জনসন অ্যান্ড জনসন এবং মডার্নাও এ পথ অনুসরণ করতে পারে। 

সার্বিক দিক বিবেচনায় ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে মেধাসম্পদের ক্ষেত্রে ছাড় খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তবে কোভিড-১৯ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ওষুধ, ভেন্টিলেটর, মাস্ক এবং অন্যান্য পণ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ফার্মাসিটিক্যাল শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেধাসম্পদ অধিকারে এ ধরনের হস্তক্ষেপ ভবিষ্যতে উদ্ভাবনকে প্রভাবিত করবে। আর এ কারণে বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি গ্রহণের সুবিধা পেতে তাদের এসব জ্ঞানের ওপর একচেটিয়া দখল থাকতে হবে। তবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মতো বিশেষ ক্ষেত্রে এ ধরনের বিচার-বিবেচনা গুরুত্বপূর্ণ নয়। 

প্রথমত, যখন সবাইকে একত্রিতভাবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, বৈশ্বিক জ্ঞানের ব্যবহার এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে, তখন প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে প্যাটেন্টগুলোকে বাধা তৈরি করতে হবে। মেধাসম্পদ অধিকার আইনগুলো কখনোই মহামারিতে ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়নি। অতীতেও জনস্বাস্থ্যের হুমকি এড়াতে নিয়মের ব্যাতিক্রম করা হয়েছে। যেমন- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পেনিসিলিন উৎপাদনে এ ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছিল। 

দ্বিতীয়ত, মহামারির সময় আরঅ্যান্ডডি (গবেষণা উন্নয়ন) কখনোই প্যাটেন্টের মতো ক্লাসিক বাজারভিত্তিক প্রণোদনার ওপর নির্ভর করে না। বরং ঝুঁকি কমাতে সরকারি গবেষণা তহবিল এবং অগ্রিম ক্রয় প্রতিশ্রুতিগুলোই প্রধান চালক হিসেবে কাজ করে। ইবোলা মহামারির সময় এমনটা ঘটেছিল, তখন বড় ধরনের সরকারি বিনিয়োগ ও নেতৃত্ব ছাড়া আরঅ্যান্ডডি (গবেষণা উন্নয়ন) কাজ সম্পন্ন হতো না। বর্তমানে কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে আবারও এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, যেখানে বিপুল পরিমাণ সরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলির প্রচেষ্টায় ঝুঁকি প্রশমিত হচ্ছে। 

শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ছয়টি ভ্যাকসিন কোম্পানিকে সরকার ১২ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা/অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন তৈরি ব্যয়ের ৯৭ শতাংশই সরকার দিয়েছে। ভর্তুকি ও অগ্রিম ক্রয়ের কারণে কোম্পানিগুলোর ঝুঁকি প্রশমিত হয়েছে এবং সফল কোম্পানিগুলো যে ব্যাপক পুরস্কৃত হবে- এ বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। উপরন্তু পূর্বের গবেষণা ভ্যাকসিন তৈরিতে অনেকটাই সহায়তা করেছে এবং অনুমোদন ত্বরান্বিত করার ফলে ক্লিনিক্যল টেস্টের খরচও কমে এসেছে। 

বর্তমানে প্রধান ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো তাদের বিনিয়োগের চেয়েও বেশি রিটার্ন পেয়েছে। যেমন- ২০২১ সালে ফাইজার- বায়োএনটেক কোম্পানির ভ্যাকসিনটি ১৫ বিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছে, যেখানে মুনাফার পরিমাণও ছিল অনেক। 

তবে প্যাটেন্ট ছাড়ের বিপক্ষে যারা রয়েছেন, তারা বলছেন এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই সমস্যার সমাধান হবে তা নিশ্চিত নয়। তবে মহামারির সময় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যত বেশি সম্ভব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে এবং এগুলোর মধ্যে প্যাটেন্ট হচ্ছে মৌলিক ও সুদূরপ্রসারী প্রতিবন্ধক। তবে অবশ্যই মেধাসম্পদ অধিকার স্থগিতই পর্যাপ্ত নয়। সব সরকারি ভর্তুকিপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোকে তাদের প্রযুক্তি ও কৌশল বিনিময়ের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। 

কোভিড-১৯ ডব্লিউ টেকনোলজি অ্যাকসেস পুল নামে ডব্লিউএইচওতে একটি স্বেচ্ছামূলক নলেজ শেয়ারিং ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কোম্পানিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলস্বরূপ ২০২০ সালের মে মাসের পর এ উদ্যোগটি গ্রহণ করা হলেও, তা এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়নি। 

মেধাসম্পদ অধিকার স্থগিতের অর্থ এই নয় যে, কোম্পানিগুলোর মুনাফার সম্ভাবনা কমে আসবে। কারণ এ ধরনের ছাড়ের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই আরঅ্যান্ডডির (গবেষণা উন্নয়ন) খরচ ও অন্যান্য বিনিয়োগ বিবেচনায় কোম্পানিগুলোকে যৌক্তিকহারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। 

তবে এ ধরনের তথ্য নিজেদের হাতে রেখে দেওয়া শুধু অনৈতিক নয়; সংকট মোকাবেলায় দেওয়া সরকারি বিনিয়োগের উদ্দেশ্যগুলোও ধ্বংস করে ফেলবে। কোভিড-১৯ একটি বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা। প্রতিরোধের কৌশলগুলো ভাগাভাগি না করলে এবং ঐক্যবদ্ধ না হলে এ সংকটের সমাধান হবে না।

মারিয়ানা মাজোকাতো ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক জয়তী ঘোষ ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এলস টরেল ইনস্টিটিউট ফর ইনোভেশন অ্যান্ড পাবলিক পারপাসের ফেলো গবেষক

(নিবন্ধটি দ্য ইকনমিস্ট-এ ২০ এপ্রিল ২০২১ প্রকাশিত)

অনুবাদক : রাবেয়া আশরাফী পিংকি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh