ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২১, ০৯:৫৯ এএম
কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরও প্রয়োজন কিছু জরুরি টেস্ট
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল লাখ লাখ মানুষ এবং এ বছর গতবারের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় কোভিড আক্রান্তদের পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে পড়ছে।
এমনিতেই এই ভাইরাস শরীরে দীর্ঘ প্রভাব ফেলে। রূপ পরিবর্তিত ভাইরাস আরো ভয়ঙ্কর। তাই কোভিড হওয়ার পর শুধু নেগেটিভ রিপোর্ট পেয়েই নিশ্চিন্ত হবেন না। করিয়ে নিন আরো কিছু জরুরি পরীক্ষা। তবে কিছু পরীক্ষা বা স্ক্যান করে বোঝা যায়, শরীরে সাম্প্রতিক ইনফেকশনের প্রভাব কতটা গুরুতর।
সেই পরীক্ষাগুলো কী কী, এক নজর দেখে নেয়া যাক:
আইজিজি অ্যান্টিবডি
যেকোনো রোগের পর শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করে। যেগুলো ভবিষ্যতে ফের কোনো সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করিয়ে রাখলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে কতটা পরিমাণে অ্যান্টিবডি রয়েছে। পরবর্তীকালে প্লাজমা দেয়ার ক্ষেত্রেও এতে সুবিধা হবে।
কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি)
রক্তের নানারকম পরীক্ষা আপনাকে বলে দিতে পারে একটা রোগ আপনার শরীরে কতটা ক্ষতি করেছে। সিবিসি করালে রেড ব্লাড সেল, হোয়াইট ব্লাড সেল ও প্লেটলেট কাউন্ট ধরা পড়ে। এতে আপনি বুঝতে পারবেন, কোভিড সেরে যাওয়ার পর আপনাকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে গেলে আর কী কী সতর্কতা নিতে হবে।
গ্লুকোজ-কোলেস্টেরল
এই ভাইরাস শরীরে অনেক ভাবেই প্রভাব ফেলে। সেই কারণেই কোভিড রোগীদের নিয়মিত রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বা দেহের তাপমাত্রা মাপতে বলা হয়। কিন্তু যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরলের মতো কোনো সমস্যা রয়েছে, তাদের বিশেষ করে কিছু পরীক্ষা করানোর উপদেশ দেয়া হয় সুস্থ হয়ে ওঠার পর। চিকিৎসক রোগীর শরীর অনুযায়ী কী কী পরীক্ষা করতে হবে বলে দেবেন। ব্লাড সুগার, বা লিভার-কিডনি ফাংশনের টেস্টও অনেককেই করতে বলা হচ্ছে।
ভিটামিন ডি
রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোভিড চিকিৎসার সময় ভিটামিন ডি’র ওষুধও খেতে বলা হয় রোগীদের। সুস্থ হয়ে ওঠার পর একবার এই পরীক্ষা করিয়ে নিলে বুঝতে পারবেন, কতটা ঘাটতি রয়েছে আপনার শরীরে।
হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা
যাদের প্রথম থেকেই হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে, তাদের শরীরে কোভিডের প্রভাব আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে। এই সংক্রমণে শরীরে নানা মাংসপেশী ফুলে যায়। যার ফলে হৃদযন্ত্রের চারপাশের মাংসপেশি কমজোরি হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যাদের হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে, তাদের অবিলম্বে হৃদযন্ত্রের স্ক্যান করিয়ে নেয়া উচিত। নয়ত ভবিষ্যতে সমস্যা আরো গুরুতর হয়ে উঠতে পারে।
নিউরো ফাংশন টেস্ট
কোভিড রোগীদের মধ্যে ভুলে যাওয়া, ক্লান্তি, ঝিমঝিমে ভাব, উদ্বেগের মতো নানা রকম মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। নিত্যদিনের কাজে-কর্মে এগুলো বাধা সৃষ্টি করছে। অনেক চিকিৎসকই এখন কোভিডের এই দীর্ঘকালীন প্রভাবগুলো নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। বিশেষ করে ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে নারীদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি চোখে পড়ছে। তাই অনেক ক্ষেত্রে এই পরীক্ষাগুলো করিয়ে নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। -আনন্দবাজার পত্রিকা