নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২১, ০৫:২০ পিএম
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত হবে না বলে বৃহস্পতিবার (৬ মে) আইন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এসকান্দারের আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয় যাওয়ার পর আইন সচিব গোলাম সারোয়ার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, খালেদার জিয়ার বিদেশ যাত্রার আবেদনে তিনি কোন দেশে যাবেন সেটি সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা নেই। এই মুহূর্তে আবেদনটি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিবেচনাধীন রয়েছে।
এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি মানবিক কারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার।
গতকাল ৫ মে পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে আবেদন করেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। পরে রাত সাড়ে ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবার তাকে বিদেশে চিকিৎসা করানো দরকার বলে জানিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে অত্যন্ত মানবিক। আমরা আবেদনটি পজিটিভলি দেখছি। আইনে যে পর্যায়ে আছে, কীভাবে কী করা যেতে পারে, সেসব দেখতে আবেদন আইনমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের মতামত আসলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে সোমবার (৩ মে) খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে টেলিফোনে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার বিষয়ে আলাপ করেন। তারই ধারাবাহিকতা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করা হলো।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া যেহেতু অসুস্থ, তাকে বিদেশ নিতে হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিতে হবে। সেটাও ঠিক করা আছে। অনুমতি পেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গৃহকর্মী ফাতেমা ছাড়া আর কে কে যাবে সেটা লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
গত সোমবার সকালের দিকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেদিন তার বাসভবন ফিরোজায় আরও ৮ জন ব্যক্তিগত স্টাফও করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে ছিলেন তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। দুই দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।