নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২১, ০৬:০৭ পিএম
পরিবেশ দূষণ রোধে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের উদ্যোগে দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) সকাল ১১টায় করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ভার্চুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রকল্পটি উদ্ধোধন করা হয়। যা ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের ফেসবুক পেইজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
বিপিআইএর কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে ইউএসএআইডি ও এফডিসিওর আর্থিক সহযোগিতায় কাউন্টারপার্ট পরিচালিত এই দূষণবিরোধী প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী।
এই প্রকল্পটি পরিবেশ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গওহর রিজভী বলেন, পরিবেশ বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম একটি অগ্রাধিকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলে থাকেন, আমরা সবাই নদীর সন্তান। নদী বাঁচলে আমরা বাঁচবো। তিনি বলেন, নদীগুলোর বেশিরভাগ দূষণ সম্পন্ন হয় শিল্পকারখানার মাধ্যমে। শিল্পকারখানাগুলো আবার অর্থনীতি আর উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিল্পকারখানাগুলোকে ইটিপি মেনে কাজ করতে হবে নয়তো তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরো বলেন, যে কোন উদ্যোগের জন্য সরকার, ব্যক্তিখাত এবং এনজিওদের একত্রে কাজ করতে হয়। আর পরিবর্তনের লক্ষ্যে যেকোন অ্যাডভোকেসি কাজের জন্য এভিডেন্স বেজড ডাটা গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পটি বিজ্ঞানভিত্তিক এভিডেন্সবেজড ডাটা নিয়ে কাজ করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। ঢাকা শহরের পানি, বায়ু আর শব্দ দূষণের জন্য যে দুর্নীতিগুলো হয় সিটি কর্পোরেশন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। পানি দূষণ বন্ধে প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে। দূষণের সূত্রপাত যেখানে সেখানেই রোধ করতে হবে। বায়ু দূষণ রোধে গাছ লাগাতে হবে। গড়ে তুলতে হবে পরিবেশবান্ধব সুন্দর নগরী।
পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে জানিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানেই আমাদের পরিবেশ সমুন্নত রাখার বিষয়টি যুক্ত করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে বিষয় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই অধিকারের কথা বলি। কিন্তু পরিবেশ রক্ষায় জনগণেরও যে দায়িত্ব রয়েছে তা আমরা ভুলে যাই। আমাদের চিন্তা ও মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। যারা আইন ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেপুটি চিফ অব মিশন জো অ্যান ওয়্যাগনার, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকি, ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপে মন্টের উন্নয়ন পরিচালক জুডিথ হারবার্টসন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জলবায়ু এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের সুপারিনটেনডিং ইঞ্জিনিয়ার ড. তারিক বিন ইউসুফ, ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক মার্ক ইয়াগগি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম পিএইচডি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কনসোর্টিয়াম প্রধান এবং ব্লু প্যানেট ইনিশিয়েটিভ এর নির্বাহী পরিচালক শরীফ জামিল।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মোবারক হোসেন সাজিদ এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয়টির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
উল্লেখ্য, দূষণবিরোধী শক্তিশালী প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ইউএসএআইডি, এফসিডিও এবং কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিপিআই এর অন্তর্ভূক্ত সংগঠন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) কে সাথে নিয়ে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করা হয়েছে। এই দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্পটি ঢাকা শহরের বায়ু এবং শব্দ দূষণসহ বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌযান কর্তৃক দুষণ এবং ডাইং কারখানা কর্তৃক দূষণ মোকাবেলায় ঢাকা শহরের শব্দ এবং বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটির মানুষ, সরকারি সংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে নিয়ে একত্রে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।