নছিমনচালককে ছেড়ে দিয়েও ‘চাপে’ ইউএনও

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২১, ১০:০১ পিএম

ক্ষতিপূরণ আদায় করতে নছিমনচালক আরিফকে চারদিন ধরে নিজ কার্যালয়ে আটকে রেখে বেকায়দায় পড়েছেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ওই নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

অনেকটা বেকায়দায় পড়ে আটক নছিমনচালক আরিফকে শুক্রবার (৭ মে) সকালে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমি অল্প টাকা বেতন পাই। এই টাকা দিয়ে সরকারি গাড়ি মেরামত করা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই ওই নছিমন চালককে আটকে রাখা হয়েছিল। এটা নিয়ে পরবর্তীতে যা ঘটেছে তার পেছনে আমার অফিসের স্টাফরাও জড়িত। তবে যেটা ঘটেছে সেটা উচিত হয়নি।

তিনি বলেন, আমি ওই নছিমনচালককে ছেড়ে দিতাম। এজন্য তার স্বজনদের খবর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আরিফ মাদকাসক্ত বিধায় তার পরিবার তাকে নিতে আসেনি। তাছাড়া আরিফ ২০ হাজার টাকা ধার করে ক্ষতিপূরণের জন্য এনেছিল। আমি সেটা রাখিনি। তবে জিম্মাদার না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়নি।

ইউএনও বলেন, ঘটনাটি নিয়ে সাংবাদিকরা লেখালেখি করেছেন। এ কারণে বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানতে পেরেছেন। তিনি এমন ঘটনা কেন ঘটলো সেটা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন। আমি এ বিষয়ে জবাবদিহিতার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

গত রবিবার (৩ মে) ভোলায় ভিডিও কনফারেন্স শেষে চরফ্যাশনে ফিরছিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। পথিমধ্যে ভোলা সদরের বাংলাবাজার এলাকায় তাকে বহনকারী গাড়িটি অতিক্রমকালে স্থানীয় বাসিন্দা আরিফের নছিমনের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে ইউএনওর গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য ঘটনার পরপরই আটক করা হয় নছিমনচালককে।

ঘটনা সম্পর্কে ইতিপূর্বে ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, নছিমন চালককে আটক করে চরফ্যাশন থানায় সোপর্দ করা হয়। তারপর বিবেচনা করে দেখলাম, ক্ষতিপূরণ উঠবে না। তাই আমার অফিসে নিয়ে আসি। এখানে আটকে রেখে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে চাই।’

ইউএনও বলেন, ‘ওকে আটকে রাখা ছাড়া আমার কিছু করার ছিল না। দুর্ঘটনায় আমার ব্যবহৃত গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়িটি আসলে কে মেরামত করবে? একজন ইউএনও কত টাকা বেতন পায় বলুন?

পাল্টা প্রশ্ন করে রুহুল আমিন বলেন, আমি চাইলে ওইদিন নছিমন চালককে কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করতে পারতাম। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে অফিসে এনে আটকে রেখেছি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh