নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ মে ২০২১, ০৯:৩৪ এএম
আজ রবিবার (৯ মে) দিবাগত রাত পবিত্র শবে কদর বা লাইলাতুল কদর। মুসলমানদের কাছে এটি অত্যন্ত মহিমান্বিত রাত। প্রতিবারের মতো এবারও দেশব্যাপী ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র শবে কদর পালন করবেন।
এ রাত ‘হাজার মাসের চেয়েও উত্তম’। কারণ পবিত্র আল-কোরআন লাইলাতুল কদরে নাযিল হয়। তাই মুসলিম উম্মাহর কাছে শবে কদরের গুরুত্ব খুবই তাৎপযপূর্ণ। এই রাত হাজার মাসের চেয়েও বেশি ইবাদতের নেকী-লাভের সুযোগ এনে দেয় ।
এ রাতে ঝিকির-আজগার, ইবাদত-বন্দেগী ও কোরআন তেলওয়াতের মধ্যদিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনা করে থাকেন।
এ রাত ও কুরআন নাজিল প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন- ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কী জান? শবে কদর হলো- এক হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। শান্তি আর শান্তি, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত (নাজিল হতে) থাকে।’ (সুরা আল-কদর)
মর্যাদাপূর্ণ এ রাতে ঈমানের সাথে ও সওয়াবের নিয়তে ইবাদত-বন্দেগি করলে- আল্লাহ তাআলা পেছনের সব গুনাহ মোচন করে দেবেন, যদি তিনি তা কবুল করেন।
শবে কদর রমজানের মধ্যেই। রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন: ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে সন্ধান করো’। (মুসলিম)। এ রাতগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯। মনে রাখতে হবে, আরবিতে দিনের আগে রাত গণনা করা হয়।
মুহাক্কিকগণ বলেন, আরবিতে ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দদ্বয়ে নয়টি হরফ বা আরবি বর্ণ রয়েছে; আর সুরা কদরে ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দদ্বয় তিনবার রয়েছে; নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে সাতাশ হয়, তাই সাতাশে রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। (তাফসিরে মাযহারি)
শবে কদরের আমল হলো:
১. নফল নামাজ- তাহিয়্যাতুল অজু, দুখুলিল মাসজিদ, আউওয়াবিন, তাহাজ্জুদ, সালাতুত তাসবিহ, তাওবার নামাজ, সালাতুল হাজাত, সালাতুশ শোকর ও অন্যান্য নফল ইত্যাদি পড়া।
২. নামাজে কিরাত ও রুকু-সেজদা দীর্ঘ করা।
৩. কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করা। এর মধ্যে সুরা কদর, সুরা দুখান, সুরা মুয্যাম্মিল, সুরা মুদ্দাচ্ছির, ইয়া-সিন, সুরা ত-হা, সুরা আর রহমান ও অন্যান্য ফজিলতের সুরাসমূহ তিলাওয়াত করা
৪. দরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়া
৫. তাওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা
৬. দোয়া-কালাম, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার ইত্যাদি করা
৭. কবর জিয়ারত করা
৮. নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সব মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া করা।
পবিত্র শবে কদর উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।