ছিমছাম ঘরে মনের প্রশান্তি

সাফওয়ানা জাবীন

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২১, ১০:০১ এএম

ঈদের দিনে ঘর গোছানোর কিছু নতুনত্ব তো আমাদের চাইই। আর তাই কীভাবে ঘরটি সুন্দর থেকে আরেকটু সুন্দর করা যায় তা নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। 

বেডরুম বেশ বিবর্ণ, একঘেয়ে দেখাচ্ছে, বসার ঘরের সোফার কুশনগুলো কেমন যেন পুরনো, বাথরুমটারও একটু সংস্কার করালে ভালো হতো- এ রকম সব চিন্তাভাবনা যদি এ মুহূর্তে মাথায় পাক খায় তাহলে এটাই সুবর্ণ সুযোগ। ঈদ উপলক্ষে এখনই গুছিয়ে নিতে পারেন আপনার ঘর। 

রান্নাঘর

বসার ঘর, শোবার ঘর কিংবা খাবার ঘর সাজাতে যতটা গুরুত্ব দিয়ে থাকি, রান্নাঘরের প্রতি ততটাই অবহেলা করি। আর ঈদে পুরো চাপটা থাকে রান্নাঘরের ওপরই। আমাদের দেশের অধিকাংশ বাড়িরই রান্নাঘর হয় ছোট, বদ্ধ ও গুমোট পরিবেশের। সাধারণত এ ধরনের রান্নাঘর অস্বাস্থ্যকর হয়। ভালো রাঁধুনি হতে হলে সময় নিয়ে রান্নার কাজটা করতে হবে। 

যদি একটু সচেতন হই, তাহলে সাদামাটা রান্নাঘরকেও সাজিয়ে-গুছিয়ে অনেক আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে পারি। রান্নাঘরের দেয়াল পানি দিয়ে ধোয়া যায় এমন সাদা রঙের হলেই ভালো হয়। এতে তাপ কিছুটা হলেও কমবে। রান্নাঘরে রান্নার কাজে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র থাকা জরুরি। এসব আসবাবে আলাদা তরকারি, হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, মসলা রাখা হলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। রান্নাঘরের সবকিছুই ঢেকে রাখতে হবে। 

এমনিতে রান্নাঘরে ফ্রিজ রাখা উচিত নয়। খুব বেশি প্রয়োজনে একটি ডিপ ফ্রিজ রাখা যায়। সেটিও চুলা থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখতে হবে। রান্নাঘরের ফার্নিচারের শেলফে মসলাপাতি কিংবা তরকারি আলাদা করে রাখতে হবে। এগুলো রাখার জন্য ছোট ছোট কাচের জার ব্যবহার করা যেতে পারে। রান্নার অন্যান্য উপকরণের মধ্যে একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন, দুটি প্রেসার কুকার, ছোট-বড় কয়েকটি প্যান-হাঁড়ি রেখে বাকিগুলো রান্নাঘরের আলাদা কোনো জায়গায় রাখা উচিত। এতে রান্নাঘর অগোছালো দেখাবে না। রান্নাঘরের দেয়াল শাকসবজি, ফলমূলের ছবিসহ নানা দৃশ্য ফ্রেমে বাঁধিয়ে টানিয়ে রাখা যেতে পারে। এতে করে রান্নাঘরের চেহারাটাই পাল্টে যাবে। 

বসার ঘর

বসার ঘর হলো অতিথি আপ্যায়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ঈদের দিনগুলোতে তো কথাই নেই। বাড়ির এ ঘরটিতে সবচেয়ে বেশি চাপ থাকে। তাই বসার ঘরের প্রতি দিতে হবে বিশেষ যত্ন। ঈদের দিন বসার ঘরের সেন্টার টেবিলে একটি বড় ক্রিস্টল পাত্রে পানি দিয়ে রেখে দেওয়া যেতে পারে তাজা ফুলের পাপড়ি সঙ্গে ফ্লোটিং ক্যান্ডেল। সেন্টার টেবিলের নিচের অংশ জুড়ে বিছিয়ে নিতে পারো সিনথেটিক কার্পেট। কর্নার শোকেসে রাখা কিছু পুরনো শোপিস সরিয়ে নতুন শোপিস যোগ করা যেতে পারে। 

বিশেষ এ দিনটি উপলক্ষে দেয়ালের ঘড়িটি বাদ যাবে কেন! ঘরের অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে মিল রেখে পছন্দের ঘড়িটি এবং টানিয়ে দিলে ভালো দেখাবে ঘরটি। দেশীয় আমেজ আনতে বাঁশ, বেত, রড ও আয়নের ফার্নিচারের সঙ্গে খাঁটি কাপড়ের পর্দা ও কুশন কভার ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্লক, বাটিক টাইডাই অথবা কাতান পাড় লাগিয়ে তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে পছন্দসই পর্দা। যদি দেয়ালে তামা, মাটি ও পিতলের মুখোশ ঝোলানো যায়, তা ঘরের দেয়ালকে আরও সুন্দর করে তোলে।

খাবার ঘর 

খাবার ঘরটি হচ্ছে অতিথিদের মন জয় করার জায়গা। তাই এই ঘরটিতে শুধু সুন্দর করে খাবার পরিবেশনই নয়, আশপাশের আয়োজনও হওয়া চাই খাবারের মতো আকর্ষণীয়। খাবার ঘরের পর্দা হালকা সবুজ রঙের হলে ভালো। এতে ফ্রেশ একটা ভাব থাকে। খাবার ঘরের টেবিল কভার কাপড়, প্লাস্টিক ও রাবারের হয়ে থাকে। টেবিল কভারগুলো পিস ও গজ হিসেবে বিক্রি হয়। বিভিন্ন রঙের কভারে ফুল, ফল ও ছাপা নকশা পাওয়া যায়। টেবিলের ধরন অনুযায়ী কভার নিতে হবে। টেবিল কভারের সঙ্গে রানার বা ম্যাট হবে বিপরীত। অর্থাৎ টেবিল কভার প্রিন্টেড হলে রানার ও ম্যাট হবে একরঙা। আর একরঙা কভারের মঙ্গে রঙিন রানার ও ম্যাট নিতে পারেন।

আধুনিক খাবার টেবিলে সিরামিকের পাত্র আর ট্র্যাডিশনাল সাজে মাটির প্লেট-গ্লাস ও পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ঘরে অনেক গৃহসজ্জাসামগ্রী একত্রে রাখা যাবে না। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh