দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়ে চিন্তিত সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২১, ০৪:১৭ পিএম

দেশে এখন অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দেয়া হচ্ছে।

দেশে এখন অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দেয়া হচ্ছে।

দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৫৮ লাখ ২০ হাজারের মতো মানুষ প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছে। আর দুটি ডোজই নিয়েছেন সাড়ে ৩৬ লাখের মতো মানুষ। টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে সরকার চিন্তিত। 

সোমবার (১৭ মে) মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের সেকেন্ড ডোজের বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত, আপনারাও চিন্তিত আছেন। দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়ার কর্মসূচি আর এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন চলতে পারে।

ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর দেশটি টিকা রফতানি বন্ধ করে দেয়। ফলে বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।

তবে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, টিকার সরবরাহ ঠিক রাখতে সরকার সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এরইমধ্যে ভারতের সাথে কথা হয়েছে। তাদের কাছে এরইমধ্যে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ টিকার অর্ডার আছে। যার মধ্যে মাত্র ৭০ লাখ বাংলাদেশ পেয়েছে।

ভারত ছাড়াও রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। অনেক জায়গায় অগ্রগতিও হয়েছে। তবে চূড়ান্ত হলেই সেটা জানানো হবে বলে জানান মন্ত্রী।

টিকা পাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এক সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

এছাড়া টিকা কেনা ছাড়াও সঠিক প্রস্তাবনা আসলে বাংলাদেশেও টিকা উৎপাদনের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, টিকা উৎপাদন করতে হলে সক্ষমতা রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনও দরকার হবে। এরকম কিছু প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা চলছে তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

সক্ষমতা থাকলেও বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন শুরু করতে হলে কমপক্ষে ৫-৬ মাস সময় দরকার বলে জানানো হয়। 

মন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সাথে টিকা আনার বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া চীন থেকে আড়াই লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে। এসব টিকা যারা অনেক বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং ফ্রন্ট লাইনারদের দেয়া হবে। যেখান থেকে টিকা আগে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই নেয়া হবে। দুটো এক সাথে পেলে, দুটোই নেয়া হবে।

এদিকে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভেরিয়্যান্টের কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশেও কয়েক জনের মধ্যে এই ভেরিয়্যান্ট পাওয়া গেছে। তবে কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এটি বাংলাদেশে খুব বেশি ছড়ায়নি।

সরকারের সঠিক সময়ে নানা পদক্ষেপ, ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কারণে ভারতীয় ভেরিয়্যান্ট থেকে নিরাপদে রয়েছে বাংলাদেশ। এই ভেরিয়্যান্ট যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য ভারতের অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত আগামীতেও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এছাড়া দেশের ভেতরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন চলাচল আরো বন্ধের প্রস্তাব করা হবে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

চলতি বছর মার্চের শেষের দিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হু হু করে বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য সরকার প্রথম বিধিনিষেধ জারি করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরেক দফা বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়ানো হয়। পরে কয়েক দফায় আরো বাড়িয়ে সর্বশেষ ২৩ মে মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh