নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২১, ০৯:২৩ পিএম
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য চতুর্থবারের মতো যৌথ সহায়তা পরিকল্পনা (জেআরপি) ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের পেছনে ব্যয় করার জন্য এবার ৯৪ কোটি ডলার সহায়তা পাওয়ার প্রত্যাশা করা হয়েছে জেআরপিতে।
মঙ্গলবার (১৮ মে) জাতিসংঘ ও দাতাগোষ্ঠীদের উপস্থিতিতে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ যৌথ সহায়তা পরিকল্পনার ঘোষণা আসে। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেআরপি ঘোষণার দিনে দাতাদের কাছ থেকে ৩৬ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ সহায়তা পাওয়া গেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া ২১ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অন্যদিকে, কানাডাসহ কয়েকটি দেশ আগেই ৩৬ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
তারা বলছেন, ঘোষণার প্রথম দিনে ৩৬ কোটি ডলার জোগাড় হয়েছে। যা মোট অর্থের এক-তৃতীয়াংশ। এছাড়া, যে অর্থ জোগাড় হবে তার পুরোটাই জাতিসংঘ ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে খরচ হবে। সংস্থাগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে তহবিল খরচ করতে পারে, সেজন্য বাংলাদেশ নিজেদের অর্থে সব ব্যবস্থা রাখবে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এ বছর ৯৪ কোটি ডলার তুলতে চায় জাতিসংঘ। গত বছর টার্গেট ছিল ১০০ কোটি ডলারের। কিন্তু সংগ্রহ করা হয় মাত্র ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ অর্থাৎ ৬১ কোটি ডলার।
জেআরপি ঘোষণা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রতি জেআরপি ঘোষণার সময় আমরা আশা করি, এটাই শেষ ঘোষণা হবে। কিন্তু সমস্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। আবারও আরেকটি জেআরপি ঘোষণা করা হলো। এ মুহূর্তে আমাদের মধ্যে এ প্রশ্ন এসেছে যে, কতদিন এ বোঝা আমাদের বহন করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কত দিন এ বোঝা টেনে নিয়ে যেতে পারবে।
‘বাংলাদেশের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন’ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়াই এর সমাধান। বিষয়টি সবার মনে রাখা উচিত। মানবিক সহায়তা দরকার কিন্তু এটা চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য যথেষ্ট নয়। জাতিসংঘসহ অন্যদের চিরস্থায়ী সমাধানের প্রতি নজর দিতে হবে।
রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশগতভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ৬,৮০০ একর বন নষ্ট হয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগণ ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
‘ক্যাম্পের ঘনবসতি কমানোর জন্য সরকার নিজ উদ্যোগে ৩৫ কোটি ডলার ব্যয়ে ভাসানচরে বসতি তৈরি করেছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে পুনর্বাসন করা। এখন পর্যন্ত সেখানে ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে নেয়া গেছে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার চার বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখনও কার্যকর কোনো সমাধান মেলেনি। সময় হয়েছে সমাধানের দিকে নজর দেয়ার। যাতে তাদের পেছনে ব্যয়ের জন্য এত পরিমাণ সম্পদ সংগ্রহের প্রয়োজন না পড়ে।