বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২১, ১০:০০ পিএম
হত্যাকাণ্ডের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা মো. হালিম খলিফা। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ঝালকাঠির রাজাপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হালিম খলিফা (৪৫) হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং একজন সেনা সদস্যসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী সুখি আক্তার বাদী হয়ে দায়ের করা ওই মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৬-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ওরফে সুমনকে হত্যার হুকুমদাতা হিসেবে ১২ নম্বর এবং টাঙ্গাইল সেনা নিবাসে কর্মরত মো. তুহিন খান নামের একজন সেনা সদস্যকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন।
হত্যা মামলায় এরমধ্যে মামলার ১ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি মন্টু খলিফা, তিন নম্বর আসামি মন্টুর স্ত্রী শিউলি বেগম ও ৮ নম্বর আসামি সেলিম খানকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের চর হাইলাকাঠি গ্রামে জমি বিরোধের জের ধরে হালিম খলিফা নামের ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত হালিম মঠবাড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একই এলাকার মৃত মজিদ খলিফার ছেলে।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, হালিম খলিফা ও মামলার প্রধান আসামি মন্টু খলিফা একে অপরের আত্মীয় এবং প্রতিবেশী। তাদের মধ্যে বাড়ির পার্শ্ববর্তী আড়াই শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিরোধপূর্ণ জমি কেনার জন্য মন্টুর সাথে যোগাযোগ করতেন মামলার ১২ নম্বর আসামি বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সমুন। জমি কেনা-বেচা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরেই সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমিনুল ইসলাম সুমনের নির্দেশে মন্টু খলিফার নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। ওখানে আমার গ্রামের বাড়ি। ওরা আমার আত্মীয়-স্বজনও নয়। তাদের উভয় পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই মামলা ছিলো। বাদীপক্ষ মনে করে আমরা অপর পক্ষকে সহযোগিতা করি। এটা তাদের ভুল ধারণা। এটা ওদের নিজেদের বিষয়। এই ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, নিহতের মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রাতেই নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।