ঝড়ে ভোলায় প্রায় ৪৫০০ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

ভোলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২১, ০৩:২৫ পিএম

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ছবি : ভোলা প্রতিনিধি

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ছবি : ভোলা প্রতিনিধি

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রায় চার হাজার ৫০০ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বাড়ি-ঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানির স্রোতে প্রায় ২ হাজার গরু-মহিষ নিখোঁজ রয়েছে। মনপুরায় ৬৫৪টি পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে জোয়ারে। 

এখনো নিম্নাঞ্চলের ২৩টি চরে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ জোয়ারের পানিবন্দি রয়েছে। তাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঝড়ে মৃত দুইজনের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।

চর নিজামের লোকালয়ে আশ্রয় নিয়েছে দুটি বাচ্চা হরিণ।ভোলার পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এর কয়েকটি পয়েন্ট। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।



জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. মোতাহার হোসেন আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মে) জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরের মধ্যে অধিকাংশই কাঁচা। জোয়ারের তীব্র স্রোতে ঘরের নিচের মাটি সরে গিয়ে ঘর ধসে পড়ে গেছে, আবার বাতাসে টিনের চাল উড়ে গেছে। 

তিনি বলেন, ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মনপুরায়। এ উপজেলায় ৪ হাজার ৬০টি ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার৭৪০টি হচ্ছে আংশিক। এছাড়া লালমোহনে ৬০, চরফ্যসনে ১৭০ ও বোরহানউদ্দিনে ২২০ টি ঘরের ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

তিনি আরো বলেন, তজুমদ্দিন উপজেলায় ঝড়ে ১২’শ মহিষ ও ৮’শ গরু হারিয়ে গেছে। মনপুরা উপজেলায় এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাঁচা সড়ক ২৫ কিলোমিটার। এছাড়া দুইটি ব্রিজ-কালভার্ট ও একটি মসজিদ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে পানিবন্দিদের জন্য ৩ হাজার ৭৫০ প্যাকেট শুকনো খাবারের বরাদ্দ এসেছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা এখানো চলছে।


অন্যদিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় অতি জোয়ারের পানিতে ১০০টি পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ২০০ মিটার বাঁধ সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়। গতকাল থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের কাজ চলছে। এ উপজেলায় ৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার আংশিক ক্ষতি হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোলা-১  এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ভোলা সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা ইতিমধ্যে এই জায়গাটা জিও ব্যাগ দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে যেকোনো সমস্যা হলে যাতে সমাধান করা যায় বা মেরামত করা যায় সেজন্য আমাদের পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ ও বালু মজুদ রয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে আমরা সাথে সাথেই মেরামত করে দিবো। বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্ক কিছু নেই।

এদিকে উপকূলের এ জেলায় সকাল থেকেই ঝড়ো হাওয়ার সাথে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উত্তাল রয়েছে মেঘনা নদী।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh