সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২১, ০৯:৫৯ পিএম
উল্লাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক কুমার দাস
পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক কুমার দাসের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করলেন ভুক্তভোগী বৃদ্ধ সাইফুদ্দিন প্রামাণিক (৭০)।
মামলার বাদী বৃদ্ধ সাইফুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তবে আমি সাংবাদিকদের কাছে পুলিশি হয়রানির কথা বলেছিলাম এটাই আমার অপরাধ। তাই গত ২৪ মে রাতে উল্লাপাড়া থানার ৪/৫ জন সাদা পোশাকে পুলিশ এসে আমাকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। আমি শ্বাস প্রশ্বাসের রুগী আমাকে দুই এসআই হাত ধরে রাখে আর ওসি নিজে ব্যাপক হারে মারতে থাকে আর বলে তোকে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সাধ মিটাই। লোহার পাইপ দিয়ে আমাকে ইচ্ছে মতো পিটায় ওসি। মারধর করাতে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে পরি। পরে রাতেই উল্লাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করায়। ওসির এই নির্যাতনে আমার দু হাতের তালু, মাথায়, ডান হাতে, গলার পিছনে, তলপেটে, পিঠে এবং দুই কানে মাথায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম আর ব্যথায় থাকতে পারছি না। এরপর ২৫ মে আমাকে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে আদালতে চালান করে দেয়। আদালত আমার অবস্থা দেখে ও জবানবন্দি নিয়ে আমাকে জামিন দেন। শারীরিক অবস্থা অবনতি দেখে চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। আমি একটু সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে সার্টিফিকেট তুলে আজ ২৭ মে সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া থানা আমলী আদালতে হাজির হয়ে মামলা দায়ের করি। আমি এই ওসির উপযুক্ত শাস্তি ও বিচার চাই।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মোরশেদুল ইসলাম ও নিখিল কুমার ঘোষ জানান, বাদীর দায়ের করা মামলাটি বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ আমলী আদালতে উপস্থাপনের পর, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাদীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে নির্দেশ দেন। বাদীর পক্ষের আইনজীবী পৃথক দরখাস্তে ঘটনার জুডিশিয়াল তদন্ত দাবি করার কারণে বাদীর বক্তব্য ও দাখিলকৃত কাগজাদি পর্যালোচনায় দরখাস্তটি জুডিশিয়াল তদন্তের জন্য গ্রহণ করেন। আদালত নিজেই দরখাস্তটি তদন্ত করবেন বলে আদেশ দেন।
উল্লাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক কুমার দাস বলেন, সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনেক আগের একটা মামলা ছিলো। তাকে সেই মামলাতেই গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমি কিংবা আমার কোনো পুলিশ তাকে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করেনি। আদালত তদন্ত করলে সঠিক ঘটনা বের হয়ে আসবে।