সিরিয়ার নির্বাচনে আবারও জিতলেন আসাদ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২১, ০১:১৭ পিএম

প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জয়ী হয়ে নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকছেন বাশার আল আসাদ

প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জয়ী হয়ে নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকছেন বাশার আল আসাদ

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদে আবারও জয়ী হয়েছেন বাশার আল আসাদ। তবে তার বিরোধীরা ‘প্রহসন’ আখ্যায়িত করে এ নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার নির্বাচনের যে ফল ঘোষণা করেছেন, তাতে দেখা যায়, আসাদ ৯৫.১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন আর নির্বাচনে ভোটদানের হার ৭৮.৬ শতাংশ।

তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ সালৌম আব্দুল্লাহ ও মাহমুদ আহমেদ মারি পেয়েছেন যথাক্রমে ১.৫ শতাংশ ও ৩.৩ শতাংশ ভোট।

সিরিয়ার বিরোধী দলগুলো এটিকে ‘প্রহসনের নির্বাচন’ আখ্যায়িত করেছে। আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো বলেছে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না।

বুধবার ভোটের পর আসাদ আবারও পশ্চিমাদের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘পশ্চিমাদের মতামত শূন্য হিসেবেই বিবেচনা করা হবে।’

প্রায় দশ বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়া এখন বিপর্যস্ত। ২০১১ সালে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচীতে সরকারি বাহিনীর রক্তক্ষয়ী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। পরে আরব দেশগুলো, তুরস্ক এবং পশ্চিমারা বিভিন্ন পক্ষকে সমর্থন করেছে। আসাদের সমর্থনে ছিল রাশিয়া ও ইরান। এ বহুধা বিভক্ত গৃহযুদ্ধে উত্থান ঘটেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস)।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এ লড়াইয়ে প্রায় তিন লাখ ৮৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষ ঘরহারা। এর মধ্যে বিদেশে শরণার্থী শিবিরে আছে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ।

এবারের নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে মূলত সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায়। সেইসঙ্গে বিদেশে সিরীয় কিছু দূতাবাসে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। 

তবে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বড় ধরণের প্রতিবাদ হয়েছে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে। দেশটির নির্বাসিত বিরোধী নেতারা এ নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বিবৃতিতে এ নির্বাচনকে ‘অবৈধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নির্বাচনের আগে দেওয়া ওই বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধান ছাড়া এটি অবাধও নয়, সুষ্ঠুও নয়।’

৫৫ বছর বয়সী আসাদ ২০০০ সাল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাবা হাফিজ আল আসাদ প্রায় পঁচিশ বছর সিরিয়া শাসন করেছেন। তারপর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।

দেশজুড়ে লড়াইয়ের মধ্যে দেশটিতে ২০১৪ সালে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা বিরোধীরা বর্জন করেছিল।

এরপর থেকেই যুদ্ধ পরিস্থিতি আসাদের অনুকূলে যেতে থাকে এবং রাশিয়ার বিমান হামলা আর ইরানের সামরিক সহযোগিতায় বড় শহরগুলোতে সরকারি বাহিনী আবারও কর্তৃত্ব স্থাপনে সক্ষম হয়।

তবে দেশটির বড় একটি অংশ এখনো দ্বিধাবিভক্ত বিদ্রোহী ও কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। সংঘাতের কোনো স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানও দেখা যাচ্ছে না।

সূত্র : বিবিসি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh