নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২১, ০৮:৪৫ পিএম | আপডেট: ২৮ মে ২০২১, ০৮:৫৯ পিএম
বল করছেন দুশমন্ত চামেরা। ছবি: সংগৃহীত
প্রথম দুই ম্যাচেই এসেছিল দারুণ জয়। তাতে স্বপ্ন বোনা শুরু হয়েছিল লঙ্কানদের প্রথমবারের মতো হোয়াইট ওয়াশ করার। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না বাংলাদেশের। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে টাইগাররা হেরে গেছে ৯৭ রানে।
প্রথম দুই ম্যাচে তিনটি ক্যাচ ছেড়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু বোলারদের উজ্জ্বল পারফরম্যান্সে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল ফিল্ডিং ব্যর্থতা। শুক্রবার শেষ ম্যাচে এক ব্যাটসম্যানেরই তিন ক্যাচ ছেড়েছে টাইগাররা। যার সুবাদে সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল পেরেরা। অধিনায়কের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৬ উইকেটে ২৮৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
মিরপুরের মাঠে স্বাগতিকরা ২৫০ রানের বেশি তাড়া করে জিতেছে মাত্র দুইবার। যার সবশেষটি ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে।
এই ম্যাচে সিরিজে প্রথমবারের মতো টস হেরেছে বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশনে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশল পেরেরা। প্রথম দুই ম্যাচে টস হেরে পরে ব্যাটিং করতে হয়েছিল সফরকারীদের। আজ টস ভাগ্য বদলে ব্যাটিংয়ের শুরুটাও দুর্দান্ত করে তারা।
২৮৭ রানের বড় লক্ষ্য। জবাব দিতে নেমে ২৮ রানেই নেই ৩ উইকেট। কি বিপদেই না পড়েছিল বাংলাদেশ! সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা মুশফিকুর রহীম আর মোসাদ্দেক হোসেনের।
আরও একবার মুশফিকের ব্যাট থেকে বড় ইনিংস বেরিয়ে এলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব, এমন আশায়ই ছিলেন ভক্ত-সমর্থকরা। কিন্তু এক মুশফিকের ওপর ভরসা করে আর কত!
আগের দুই ম্যাচে ৮৪ আর ১২৫ রানের ইনিংসে দলকে জেতানো মুশফিক এবার সেট হয়ে আউট হলেন ২৮ রানে। বাংলাদেশের জয়ের আশা কার্যত শেষ তার সে আউটেই।
মোসাদ্দেকের ব্যাটে একটু আশার আলো ছিল। প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা এই ব্যাটসম্যান দেখেশুনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরিও তুলে নেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। কিন্তু এরপরই ঘটে ছন্দপতন।
রমেশ মেন্ডিসকে রিভার্স সুইপের মতো বিলাসী শট খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ হন মোসাদ্দেক। ৭২ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ৫১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এরপর ১৭ বলে ১৬ করে আউট হন আফিফ। ১৫৮ রানে বাংলাদেশের শেষ ৬ উইকেট।
দুশমন্ত চামিরা আজ বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন। তাতেই মূলত পুড়ছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। লঙ্কান এই ডানহাতি এই পেসারকে খেলতে গিয়ে রীতিমত নাভিশ্বাস উঠেছে স্বাগতিকদের। ২৮ রানেই তারা হারিয়ে বসে ৩ উইকেট।
৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলকে লড়াইয়ে ফেরাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছিলেন তামিম। তার সেই চেষ্টা থামে চামিরার অফস্ট্যাম্পের বাইরে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। অনেকটা ইয়র্কার লেহ্ন ধরনের ডেলিভারিতে তামিম ব্যাট পেতে দিয়েছিলেন, সেই ব্যাট মাটিতে আঘাত হানে। আবেদন করেন বোলার, আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
আফিফের আউটের পর ক্রিজে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে মিরাজ ও ব্যর্থ হাল ধরতে। দুশমন্থ চামিরার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে দেরি করে ফেলেন মিরাজ। সহজ ক্যাচ যায় মিড উইকেটে। ৪ বল খেলে রানের দেখা পাননি মিরাজ।
মিরাজের পর তাসকিন আহমেদকেও দাড়াতে দেননি দুশমন্থ চামিরা। বাঁহাতি তাসকিনের জন্য রাউন্ড দা উইকেটে এসে গতিময় ইয়র্কারে বোল্ড করেন চামিরা।
শেষ দুই উইকেটে শরিফুল ও মোস্তাফিজ মাহামুদউল্লাহকে সাপোর্ট দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ফিফটির পরের বলেই বিনুরা ফার্নান্দোর স্লোয়ার শর্ট বলে র্যাম্প শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়লেন মাহমুদউল্লাহ। ৬৩ বলে ৫৩ রানে তার বিদায়েই ম্যাচের সমাপ্তি। ৯৭ রানের জয়ে সিরিজ শেষ করল শ্রীলঙ্কা।