ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২১, ০২:২৯ পিএম
হুমায়ুন ফরীদি। ছবি: সংগৃহীত
হুমায়ুন ফরীদি চলে গেছেন ৯ বছর। বেঁচে থাকলে আজ তিনি ৬৯ বসন্ত পার করতেন। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে এই অভিনেতা পর্দার পেছন থেকে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। বাংলা সিনেমার খল নায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেও বাস্তবে তিনি ছিলেন আদর্শ ব্যক্তিত্ব। যিনি দেশের অভিনয় জগতের পথিকৃৎ।
আশি ও নব্বইয়ের দশকে যে কজন অভিনয়শিল্পী মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র- তিন মাধ্যমেই তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি তাদের অন্যতম। যদিও এই তালিকা খুব লম্বা ছিল না। এই গুণী শিল্পী কাটিয়েছেন দীর্ঘ বর্ণাঢ্য অভিনয়জীবন। আজ এই কিংবদন্তির ৬৯তম জন্মবার্ষিকী।
হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৯ মে, ঢাকার নারিন্দায়। বাবার নাম এটিএম নুরুল ইসলাম, মায়ের নাম বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে ফরীদি ছিলেন দ্বিতীয়। ১৯৭০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেন চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি তাতে যোগ দেন।
স্বাধীনতার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক শ্রেণীতে শিক্ষাজীবন শুরু করেন হুমায়ুন ফরীদি। এখানেই তার অভিনয় প্রতিভার বিকাশ। নাট্যগুরু সেলিম আল দীনের কাছে নাট্যতত্ত্বে দীক্ষা নেন। যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারে। সহজাত অভিনয়-গুণে আদায় করে নেন দর্শকের ভালোবাসা।
১৯৮২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘নীল নকশার সন্ধ্যায়’ ও ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’ নাটকে অভিনয় করে হুমায়ুন ফরীদি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’ আজও দর্শকের স্মৃতির পাতায় ভাস্বর। এতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যান তিনি।
বহুমাত্রিক এই অভিনেতা এক সময় জড়িয়ে পড়েন চলচ্চিত্রে। এখানেও সাফল্যের দেখা পান তিনি। খুব কম সময়ে অধিকার করেন শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতার স্থান। বাংলা চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে তিনি যোগ করেন নতুন মাত্রা। তিনি ‘মাতৃত্ব’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ২০০৪ সালে।
২০১২ সালে ফাল্গুনের প্রথম দিনে অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে বাংলাদেশের অভিনয়-জগতের উজ্জ্বলতম এই শিল্পী মারা যান।