বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২১, ০৯:০০ পিএম | আপডেট: ০২ জুন ২০২১, ০৯:০২ পিএম
পেট জোড়া লাগানো জমজ শিশু
বরিশাল জেলার গৌরনদীতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে পেট জোড়া লাগানো জমজ শিশুর জন্ম হয়েছে। এখন পর্যন্ত নবজাতক দুজন সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাদের পিতা আবু জাফর। বর্তমানে জোড়া শিশু দুটি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বুধবার (২ জুন) দুপুর ১২টায় গৌরনদী উপজেলা সদরের ময়ূরী ক্লিনিকের চিকিৎসক তানজিদ রহমানের সফল অস্ত্রোপচারে জোড়া লাগানো জমজ শিশুর জন্ম দেন প্রসূতি হালিমা।
আবু জাফর জানান, তাদের বাড়ি মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের সেলিমপুর গ্রামে। এছাড়াও তাদের আরো দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
আবু জাফর জানান, সিজারিয়ানের পর আমার স্ত্রী সুস্থ আছেন বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। আমার নবজাতক সন্তান দুজনও সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন ডাক্তার। তবে গৌরনদীতে জোড়া লাগানো জমজ শিশু দুজনের সঠিক চিকিৎসা হবে না বলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখানে ৩ টা ৪০ মিনিটে নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছি।
দায়িত্বরত চিকিৎসক সৌরভ জানিয়েছেন, ভর্তি হওয়া নবজাতক দুইজন এখন পর্যন্ত সুস্থ রয়েছে। তাদের আলাদা করার অপারেশন বরিশালে হয় না। এ জন্য নবজাতদ্বয়কে ঢাকায় নিতে হবে। আপনারা জানেন, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশু দেশে আলাদা করা হয়। এর আগেও দেশে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো মাথা আলাদা করা হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আমি আশা করি এই শিশু দুজনকেও আলাদা করা সম্ভব। এজন্য তাদেরকে শিগগিরই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হবে। আমরা আজই তাদের ঢাকা নিয়ে যেতে বলেছি। আজ না পারলেও হয়তো আগামীকাল নিয়ে যাবেন।
ডা. সৌরভ বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমি যোগদানের বিগত তিন বছরের মধ্যে এমন নবজাতক এই প্রথম ভর্তি হলো।
নবজাতকদ্বয়ের নানী মৌলি বেগম জানিয়েছেন, দুই মাস আগে স্থানীয় ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করালে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন জমজ সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে। কিন্তু তারা যে জোড়া লাগানো তা বলেনি। মৌলি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন যেন তার নাতনী দুজন সুস্থ থাকেন। একই সাথে আর্থিক অসচ্ছল হওয়ায় ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাকদের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয় বলে সরকার ও সবার কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন।
ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকের পিতা আবু জাফর জানান, তিনি পুরান ঢাকায় মুদি দোকান ছিলো। কিন্তু করোনার কারণে ক্রেতা কমে যাওয়ায় পাওনা টাকা পরিশোধ করেননি অনেক ক্রেতা। ফলে তার মুদি দোকান বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ঢাকায় ভ্যানগাড়ি চালান।
আবু জাফর বলেন, ভূমিষ্ঠ হওয়ার আমার সন্তান দুটি বাঁচাতে হলে অপারেশন করতে হবে। এই অপারেশন ব্যয়বহুল বলে শুনেছি। আমার একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। এজন্য সকলকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।