বাজেট পুনর্বিন্যাস করলে সরকারেরই লাভ হবে

ড. আতিউর রহমান

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২১, ০৩:০৭ পিএম | আপডেট: ০৯ জুন ২০২১, ১২:১১ এএম

ড. আতিউর রহমান। ফাইল ছবি

ড. আতিউর রহমান। ফাইল ছবি

এবারের বাজেটের সার্বিক পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ থেকে এ কথা বলা যায়, অনেক ক্ষেত্রে আরো ভালো করার সুযোগ ছিল। তা সত্ত্বেও শেষ বিচারে এই বাজেটে বৃহত্তর জন-চাহিদার প্রতি সরকারের সংবেদনশীলতা যথেষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে। 

করোনাজনিত অর্থনৈতিক স্থবিরতায় নতুন করে দরিদ্র হওয়া মানুষের সংখ্যার বিবেচনায় এবারের বাজেটের কাছে প্রত্যাশা ছিল- সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো। কারণ ইতিমধ্যে করোনায় বিপাকে পড়া মানুষ এবং সামনে বিপদে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। 

বলতে দ্বিধা নেই, এই আকাক্ষা বহুলাংশে পূরণ হয়েছে। তবে কেবল সরকারের দেয়া সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাগুলো যথেষ্ট হবে এমন আশা আমরা কেউ করিনি। বিশেষ করে বাজেটের গতানুগতিক কাঠামোর খোল-নলচে না বদলিয়ে করোনাকালের নতুন দরিদ্রদের কাছে সরকারের দেয়া সামাজিক সুরক্ষা সেবা পৌঁছানো মোটেও সহজ নয়। 

তাই প্রথম থেকেই আমরা জোর দিয়ে আসছি, কর্মসংস্থানের ওপর। দেখে ভালো লাগছে যে, বাজেট প্রস্তাবে আমাদের সেই দাবি দাওয়ার বেশ খানিকটার প্রতিফলন ঘটেছে। ব্যবসাবান্ধব রাজস্ব উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার বিনিয়োগ পরিস্থিতির আরো উন্নতি করার দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছেন। দেশীয় শিল্পের বিকাশের জন্যও বাজেটে যথেষ্ট কর সহায়তায় জোর দেয়া হয়েছে। এসব সহায়তা সত্যি সত্যি বাস্তবে দেয়া গেলে শিল্প ও ব্যবসায় নিশ্চয়ই গতি আসবে। আর তা এলে নতুন করে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে করে মানুষের আয় বাড়বে। বাড়বে ভোগ। চাঙ্গা হবে অর্থনীতি। অর্থনীতি গতিশীল হলে অভ্যন্তরীণ বাজারের আকার বাড়বে। সেক্ষেত্রে চাহিদা বাড়বে বলে বিনিয়োগও বাড়বে। অর্থাৎ একটি ইতিবাচক চাক্রিক প্রক্রিয়া শুরু হবে। 

কাজেই অনেকে জনবান্ধব বনাম ব্যবসাবান্ধব বাজেটের যে বিতর্ক উত্থাপনের চেষ্টা করছেন তা আমার কাছে অবান্তর মনে হচ্ছে। অযথা এই বিতর্ক শুধু মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। ব্যবসা ও শিল্পের উন্নতি না করা গেলে জনগণের কল্যাণ কী সরকার একাই করতে পারবে? সেজন্যই বলি জনবান্ধব বনাম ব্যবসাবান্ধব বিতর্কটি আসলেই একটি ‘ফলস ডাইকোটমি’। অযথা বিতর্ক।

বাজেট ও সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে যেকেনো আলাপের শুরুতেই যেটা আমাদের মনে রাখা দরকার তা হলো- এখন টাকা নয়, টিকাই প্রধান বিবেচ্য। প্রবৃদ্ধি, ঘাটতি অর্থায়ন- এগুলোর চেয়েও ৬০-৭০ শতাংশ মানুষকে কীভাবে দ্রুত টিকা দেয়া যায়, সেই প্রশ্নটি এখন মুখ্য। টিকা পেলেই মানুষের মনে স্বস্তি আসবে। ব্যবসায়ী আস্থাও বাড়বে। এতে মানুষকে বাঁচানো ও অর্থনীতিকে গতিশীল করা- এই দুটি লক্ষ্যই অর্জিত হবে। জীবন ও জীবিকার স্বার্থেই যে কোনো মূল্যে টিকা সংগ্রহের বিকল্প নেই। 

এমনটি মনে করছি, কারণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলোর বিচারে আমরা আসলেই এখন একটি শক্তিশালী অবস্থানে আছি। বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও চলতি বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ। আসন্ন অর্থবছরে তার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ৭.২ শতাংশ। বিনিয়োগ-জিডিপি অনুপাত ৩২.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ৩৩.১ শতাংশ। রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। মাথাপিছু আয় চলতি বছরে ২,২২৭ ডলার। আসন্ন বছরে বেড়ে হবে ২,৪৬২ ডলার। মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে (৫-৬ শতাংশ)। রফতানি বাড়ছে। নিরন্তর সুরক্ষা দিচ্ছে কৃষি। প্রবাসী আয় মাসে ২ বিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০তম এই বাজেট নিয়ে ভাবনায় তাই সামষ্টিক অর্থনৈতিক শক্তি আমাদের আশা দেখাচ্ছে।

স্বাস্থ্য খাতে গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে বাজেট বরাদ্দ দেয়ার যে আশা অনেকে করেছিলেন সে রকমটি হয়নি। মোট বরাদ্দ প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। আর বাজেটের শতাংশ হিসেবে এটি ৫.৪ শতাংশ। প্রত্যাশা ছিল অন্তত ৭ শতাংশ বরাদ্দের। সম্ভবত বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতার নিরিখে এ খাতে বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে সাবধানী হয়েছেন বাজেট প্রণেতারা। 

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গড়ে স্বাস্থ্যে উন্নয়ন বরাদ্দের ৭৬ শতাংশ ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। অব্যায়িত থেকেছে ২৪ শতাংশ। তবুও ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে মহামারি মোকাবেলার জন্য। গত বছরও এমন বরাদ্দ ছিল। এই ধারাবাহিকতা প্রশংসনীয়। আমি নিশ্চিত যে, এই বরাদ্দ প্রয়োজনবোধে আরো বাড়ানো হবে। সরকারের সেই সক্ষমতা আছে। ঢাকার বাইরে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় প্রণোদনাও প্রশংসনীয়। স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের কাঠামোগত পরিবর্তন না করে কেবল বরাদ্দ বাড়ালে সুফল পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে হেলথ ভাউচার চালু করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছেন এমন মানুষদের একটি অংশের দায়িত্ব সরকার নিলে তা খুবই কার্যকর হবে। এ রকম একটি পাইলট কর্মসূচি কোভিড রোগীদের নিয়ে কি করা যায় না? 

এ বাজেটে এমন একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বাজেট পর্যালোচনা শেষে এমন একটি স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচি প্রচলনের সুযোগ কিন্তু এখনো নেয়া যেতে পারে।

আসন্ন অর্থবছরের শিক্ষা বাজেট প্রায় ২১ শতাংশ বেড়ে বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকায়। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বহু দিন বন্ধ আছে। সামনেও হয়তো বন্ধ রাখতে হতে পারে। কাজেই অনলাইন শিক্ষা কাঠামো গড়ে তোলায় মনোযোগ দেয়া একান্ত জরুরি। আর সেক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি বেসরকারিগুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোও কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। সর্বোপরি ‘ডিজিটাল ডিভাইড’-এর কারণে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা যেন পিছিয়ে না পড়ে, সেদিকে আরেকটু নজর দেয়া যেতো বলে মনে হয়। এজন্য ইন্টারনেট ও স্মার্ট ডিভাইস উভয়েরই দাম কমানো উচিত।

কৃষিতে বেশ কিছু নতুন, উদ্ভাবনি আর সর্বোপরি সময়োচিত উদ্যোগের প্রস্তাব দেখা গেছে বাজেট বক্তৃতায়। এর মধ্যে আছে- প্রতিটি ইউনিয়নে ৩২টি করে সবজি-পুষ্টি বাগান ও ১০০টি করে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। মহামারিকালে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এগুলো দরকারি। ‘রিজিওনাল সার্ক সিড ব্যাংক’-এর উদ্যোগটিও একই রকম সময়োপযোগী হয়েছে। আর ৪১টি জেলায় ‘কৃষকের বাজার’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কৃষকের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার সংকট অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে মনে করি। আপাতদৃষ্টিতে চলতি অর্থবছরের প্রায় ৩০ হাজার কোটি থেকে বেড়ে আসন্ন অর্থবছরে প্রায় ৩২ হাজার কোটি হওয়াকে বড় মনে না হলেও, কৃষিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ৬ শতাংশ। আমাদের মোট বাজেটও কিন্তু ওই ৬ শতাংশই বেড়েছে (চলতি বছরের প্রস্তাবনার তুলনায়)। দুর্যোগে কৃষি রক্ষা কবচ হিসেবে যেভাবে কাজ করেছে, সে বিবেচনায় বরাদ্দের এই ধারা বাজেট প্রণেতাদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সংবেদনশীলতা প্রমাণ করে।

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে চলতি বছরের প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ আসন্ন বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ সাত হাজার কোটি টাকার বেশি (অর্থাৎ মোট জাতীয় বাজেটের প্রায় ১৮ শতাংশ)। করোনার কারণে নতুন করে দরিদ্র হওয়া পরিবার আর প্রান্তিক মানুষকে রক্ষা করতে এই কর্মসূচিগুলি কার্যকর হবে- সন্দেহ নেই। তবে বাস্তবায়নে দক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে উপকারভোগী নির্বাচনে ডিজিটাল টার্গেটিং ব্যবহার করে ভুল-ত্রুটি ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসা খুবই জরুরি। 

ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে এই সহায়তা দেবার যে নয়া সংস্কৃতি গড়ে উঠছে, তা আরো দ্রুত প্রসার কাম্য। আর সেই বিচারে মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ৫ থেকে ৭.৫ শতাংশ করপোরেট কর ধরার প্রস্তাবটি মোটেও যথোপযুক্ত হয়নি। আখেরে এই কর গ্রাহকের ওপরই বর্তাবে। এরা কার্যত খুব অসহায় ও কম আয়ের মানুষ। করোনাকালে এই সেবাদানকারীরা যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে, সে জন্য তাদের শাস্তি না দিয়ে পুরস্কৃত করার প্রয়োজন ছিল। নিশ্চয়ই শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।

আরো কিছু কর প্রস্তাব নিয়ে ভাবার সুযোগ আছে। যেমন- শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চাপে পড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়ের ওপর কর আগের জায়গায় না রেখে কমানো উচিত, তামাকপণ্য উৎপাদনকারিদের আয়ের ওপর কর আগের জায়গায় (৪৭.৫ শতাংশ সারচার্জসহ) না রেখে ৫০ শতাংশ করা উচিত। তামাকপণ্যে সম্পূরক শুল্কের প্রস্তাবটিও হতাশ করেছে। কোনো তামাকপণ্যের ওপরই সম্পূরক শুল্ক হার বাড়ানো হয়নি। সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবায়ন করা গেলে সরকার বাড়তি রাজস্ব পেতো ৩,২০০ কোটি টাকা। 

এছাড়াও উচ্চ আর প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেট প্রতিটির দাম মাত্র ০.৫ টাকা করে বাড়ানো হলেও, কম দামি সিগারেট, বিড়ি, জর্দা ও গুলের দাম তো বাড়ানোই হয়নি। অথচ প্রয়োজন ছিল কর বাড়িয়ে সবাইকে একটা ধাক্কা দেবার। মনে রাখা চাই, সমাজের নিচের দিকের ২০ শতাংশ মানুষের আয়ের ২০ শতাংশের বেশি খরচ হয়ে যাচ্ছ তামাকপণ্য ব্যবহারে। এই টাকাটা নিশ্চয় তারা মানব উন্নয়নে ব্যয় করতে পারতেন।

বাজেটে আয় বুঝে ব্যয় করতে হয়। রাষ্ট্রের সেই আয়ের কী অবস্থা? এনবিআরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়নি (চলতি বছরের প্রস্তাবিতর সমান রাখা হয়েছে)। তবুও ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেটকে করোনা পরিস্থির প্রেক্ষাপটে চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে। এই লক্ষ্য অর্জনে এনবিআরকে সর্বোচ্চ সক্ষমতার পরিচয় দিতে হবে। শিল্প ও ব্যবসাবান্ধব যে কর নীতি প্রস্তাবিত বাজেটে আছে, তার ভিত্তিতে মনে হচ্ছে বৃহৎ করদাতারাও কর দিতে আগের চেয়ে বেশি উৎসাহিত হবেন। সত্যি বলতে ব্যবসাবান্ধব কর নীতিই এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। এক ব্যক্তির মালিকানাধীন কোম্পানি ও কয়েকজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোম্পানির করহার যথাক্রমে ৭.৫ ও ২.৫ শতাংশ কমিয়ে ২৫ ও ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। 

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলমান অবস্থায় এ উদ্যোগের ফলে ছোট কোম্পানিগুলি এর সুফল পাবে। নতুন ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারাও উপকৃত হবেন। কর্মসংস্থান বাড়বে। আর ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে যারা করজালের বাইরে ছিলেন তারা কর দিতে উৎসাহিত হবেন। ফলে রাজস্ব লক্ষ্য অর্জনে তা সহায়ক হবে বলেই মনে হচ্ছে। এ ছাড়াও করোনা চিকিৎসার যন্ত্রাদি আমদানিকে করমুক্ত রাখা, জুসার, ব্লেন্ডার ইত্যাদি গার্হস্থ্য ব্যবহারের বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদির দেশীয় উৎপাদকদের সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগগুলো নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী। একইভাবে নারী উদ্যোক্তাদের টার্নওভার করের সীমা ৭০ লাখ টাকায় উন্নিত করার প্রস্তাবটি ইতিবাচক। নিয়ম-নীতি সহজ করে করোনাকালে গড়ে ওঠা অসংখ্য ফেইসবুক-নির্ভর ও ই-কমার্সের উদ্যোক্তাদের (যাদের বেশির ভাগই নারী) আরো সহজে স্টার্টআপ তহবিল ও বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ কী করে দেয়া সম্ভব, সে দিকটিও বাজেটে আসতে পারতো। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়েই একটি ব্যাংক ও একটি এমএফএস প্রোভাইডার মিলে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক। প্রায় শতভাগ ঋণই ফিরে এসেছে। তাই এমন উদ্ভাবনীমুলক উদ্যোগ নেয়ার সময় যে বয়ে যাচ্ছে।

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর যে সব পরামর্শমূলক প্রস্তাব আসছে, সেগুলোর বিশ্লেষণ করে বাজেটটি পুনর্বিন্যাস করলে সরকারেরই লাভ হবে। কারণ বাজেট শেষ পর্যন্ত সরকারের রাজনৈতিক দলিলও বটে। এখনো সময় আছে বাজেট প্রণেতাদের হাতে। আমরা আশাবাদী জুন মাস জুড়ে জাতীয় সংসদে যে বাজেট আলোচনা হবে, সেখানে আইন প্রণেতারা এই সময়োপযোগি বাজেটে আরো কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনবেন। আর তা করা গেলে সরকারের এই বাজেটকে সত্যি সত্যি জনবান্ধব বলা সম্ভব হবে।

বাজেটে আয় বুঝে ব্যয় করতে হয়। রাষ্ট্রের সেই আয়ের কী অবস্থা? এনবিআরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়নি (চলতি বছরের প্রস্তাবিতর সমান রাখা হয়েছে)। তবুও ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেটকে করোনা পরিস্থির প্রেক্ষাপটে চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে। এই লক্ষ্য অর্জনে এনবিআরকে সর্বোচ্চ সক্ষমতার পরিচয় দিতে হবে।

লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর। 

যোগাযোগ : [email protected]

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh