বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে...

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২১, ০৯:৫৩ এএম

পোকামাকড়ের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতীকী ছবি

পোকামাকড়ের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতীকী ছবি

বর্ষাকালে ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় পোকামাকড়ের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই কীটপতঙ্গ কেবল খাবার, পোশাক ও আসবাবপত্র নষ্ট করে না, তারা স্বাস্থ্যের ওপর কিছুটা প্রভাব ফেলে। 

তাই বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচার সহজ কয়েকটি টিপস...

নিমপাতা ও কালোজিরা

প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে পরিচিত নিমপাতা ও কালোজিরা খুব ভালো ফল দেয়। রান্নাঘরের কেবিনেট, আলমারি, বুক শেলফ, ঘরের বিভিন্ন তাক ও কেবিনেটে শুকনো নিমপাতা বা কালোজিরা কাপড়ে বেঁধে রেখে দিন। পোকামাকড় চলে যাবে।

ল্যাভেন্ডার তেল

ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধ পোকামাকড় রোধে বেশ কাজে দেয়। বিশেষত, মশা-মাছির ক্ষেত্রে এই তেলে আশানুরুপ ফল পাওয়া যায়। খালি শ্যাম্পুর বোতলে এককাপ পানি নিয়ে তার মধ্যে তিন চামচ ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে নিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে তা ছড়িয়ে দিতে হবে ঘরের কোণায় কোণায়।

পুদিনা পাতা

একমুঠো পুদিনা পাতা প্রথমে পানিতে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠাণ্ডা করে ঘরের যেসব জায়গায় মাকড়সার জাল আছে সেখানে স্প্রে করুন। পুদিনার তেল ও পানির মিশ্রণও স্প্রে করতে পারেন।

টি ট্রি তেল

পানির সাথে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে, সেই মিশ্রণ ঘরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিলে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমে যাবে। এমনকি বর্ষায় ছারপোকার জন্যও এটি খুবই কার্যকর।

ইউক্যালিপটাস তেল

ইউক্যালিপটাস গাছের গা থেকে বের হওয়া ঝাঁজালো গন্ধ কোনো কীটপতঙ্গ, এমনকি ইঁদুরও সহ্য করতে পারে না। তাই খালি শ্যাম্পুর বোতলে এককাপ পানি ভরে, তাতে এক চামচ লেবু তেল ও দু’চামচ ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। বাড়ির চারপাশে, বেসিনে এই মিশ্রণ স্প্রে করলেই বর্ষায় পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

ব্লিচিং পাউডার

একদিন পর পর বাড়ির চারপাশে ব্লিচিং পাউডার ও কার্বলিক অ্যাসিড ছড়ান। এছাড়া করোনা সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে বাড়ির মেঝে, যেসব জায়গা বেশি হাতের সংস্পর্শে আসে সেগুলোকে পানিতে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে পরিষ্কার রাখুন।

কর্পূর

কর্পূর ব্যবহার মশা, মাছি তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ ও সাধারণ উপায়। কয়েক টুকরা কর্পূর আধা কাপ পানিতে ভিজিয়ে ঘরের এক কোণে রেখে দিলে দেখবেন, মশা-মাছি উপদ্রব অনেক কমে গেছে। পিঁপড়া নিধনে দরজা ও জানালায় বরিক পাউডার ছড়িয়ে দিন। এছাড়া এক কাপ নারিকেল তেল নিয়ে তার সাথে কর্পূরের গুঁড়ো মিশিয়ে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ছিটিয়ে দিন।

কেরোসিন তেল ও ঢাকনা দেয়া ডাস্টবিন

গরম পানিতে সাবান ও কেরোসিন তেল মিশিয়ে খাটের তলায় ও ঘরের প্রতিটি কোণে স্প্রে করুন। পোকার উপদ্রব কমবে। রান্নাঘরে ঢাকনা দেয়া ডাস্টবিন ব্যবহারে দূর হবে মাছির সমস্যা। ব্যবহারের পর নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার করুন।

ফিনাইল

প্রতিদিন ঘরের মেঝে পরিষ্কার করা জরুরি। ঘর মুছতে ফিনাইল বা অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড ব্যবহারে পোকামাকড়ের আনগোনা অনেকটাই কমে যাবে।

স্যাভলন ও ভিনেগার

স্যাভলন ও ভিনেগার দিয়ে রান্নাঘর মুছুন। পিঁপড়ার উপদ্রব কমাতে জানালায় ও দরজায় বরিক পাউডার দিন। ভিনিগার অ্যাসিটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যার গন্ধ পেলেই মাকড়সা পালায়। প্রথমে এককাপ সাদা ভিনেগার ও এককাপ পানি মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে ঘরের আনাচে-কানাচে স্প্রে করুন। যেখানে মাকড়শার উপদ্রব বেশি সেখানে বেশি করে স্প্রে করলে হাতে-নাতে ফল পাবেন। বর্ষায় বেসিন ও কমোড দিয়ে উঠে আসা বিভিন্ন কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষার জন্য গরম পানিতে স্যাভলন মিশিয়ে কয়েক দিন পরপর সেটি কমোড, বেসিন ও রান্নাঘরের সিংকে ঢালুন। খেয়াল রাখবেন, স্যাভলনের পানি যেন অবশ্যই সরাসরি পাইপে পড়ে। তা না হলে কমোড কিংবা বেসিনে চিড় ধরতে পারে।

তবে পোকামাকড় নিধনে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানে থাকবেন। কিছু কিছু রাসায়নিক বস্তু শুধু অস্বস্তিতেই ফেলে না বরং স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রাকৃতিক উপায়েই চেষ্টা করুন বর্ষাকালে পোকামাকড় নিধন করতে। -ইউএনবি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh