নার্সারির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি

আহমেদ নাসিম আনসারী

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২১, ১০:১৮ এএম

স্বরূপের ইউনিয়নজুড়েই গড়ে উঠেছে নার্সারি।

স্বরূপের ইউনিয়নজুড়েই গড়ে উঠেছে নার্সারি।

এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তর কৃষি ফার্ম দত্তনগর ফার্মের মধ্যে চলে যাওয়া পিচের রাস্তা ধরে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এগিয়ে গেলেই ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা ৪নং স্বরূপ ইউনিয়ন। এটি একেবারে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা ইউনিয়ন। যে দিকে তাকানো যায় শুধু চারা গাছের নার্সারি আর ফলদ গাছের বাগান। 

পুরো ইউনিয়নজুড়েই গড়ে উঠেছে এমন নার্সারি। ১৩টি গ্রাম নিয়ে স্বরূপপুর ইউনিয়ন। এর মধ্যে আটটি গ্রাম প্রায় সবটুকুজুড়ে রয়েছে নার্সারি আর ফলজ বাগান, বাকি পাঁচ গ্রামে আংশিক। ইউনিয়নে মোট আবাদযোগ্য জমি ২৭৭০ হেক্টর। এরমধ্যে শুধু নার্সারি রয়েছে ৪৩ হেক্টর জমিতে। বাকি দেড় হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে ফলদ গাছ। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং জাতের কমলা, মাল্টা ও বারি-১১ সহ বিভিন্ন জাতের আম।

নার্সারি ব্যবসায়ী রফিকুল জানায়, এক সময় না খেয়ে দিন কাটিয়েছি। এখন আমার নার্সারিতে প্রতিদিন ৩০ জন শ্রমিক কাজ করে। বছরের বারো মাস যাদের কর্মসংস্থান আমার নার্সারিতে। দেশে আমিই প্রথম সমতল ভূমিতে দার্জিলিং জাতের কমলা চাষে সফল হয়েছি। এখন আমার কাছ থেকে চারা নিয়ে দেশের শত শত কৃষক দার্জিলিং জাতের এই কমলা চাষ করছে।

একই ইউনিয়নের হানিফপুর গ্রামের ভাই ভাই নার্সারির মালিক ইমরোজ হোসেন জানান, ১৯৯২ সালে আমরা তিন বন্ধু মিলে প্রথম নার্সারি গড়ে তুলি। বর্তমানে ছয় বিঘা জমিতে নার্সারিসহ ১৫ বিঘা জমিতে ফলদ গাছ রয়েছে। আমার নার্সারিতে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে।

নার্সারি শ্রমিক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আগে আমি পরের জমিতে শ্রমিকের কাজ করতাম। তখন বেশির ভাগ সময়ই কাজ থাকতো না। ফলে সংবার চালাতে হিমশিম খেতাম। এখন নার্সারিতে কাজ করি। প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে মাসে ১২ হাজার টাকা মজুরী। দির্ঘদিন এভাবেই নার্সারিতে কাজ করেই আমার সংসার চলছে। এভাবে তার মতো শত শ্রমিক নার্সারিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

স্বরূপপুর ইউনিয়ন উপ-সহকারী কর্মকর্তা রবিউল কবির পল্লব জানান, সত্যি কথা বলতে কি নার্সারির কাজে আমাদের তেমন কোনো সহযোগীতা প্রয়োজন হয় না। তবে প্রযুক্তিগত কোনো প্রয়োজন হলে আমরা তাদের সহযোগীতা করি। 

ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা স্বরূপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, আমার ইউনিয়ন জুড়েই নার্সারি ও ফলজ বাগান গড়ে উঠেছে। এ ব্যবসায় তারা ভালো লাভ করছে। 

মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান আলী উপজেলার ইউনিয়ন জুড়ে নার্সারি ও ফলের চাষ হয় উল্লেখ করে জানান, তারা চারা উৎপাদন ও ফলজ বাগান করে লাভবান হচ্ছে। ফলে নার্সারিতে এলাকার কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আমরা তাদের জৈব সার উৎপাদন, বালাইনাশক ও ফল উৎপাদনের যাবতীয় প্রযুক্তিগত সহযোগীতা করে থাকি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh