নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২১, ০৪:০৫ পিএম
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট
রাজধানী ঢাকার সাথে গাজীপুর হয়ে দেশের ৩৭ জেলার মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যাতায়াত করে। ঢাকার সাথে যোগাযোগ সহজতর করতে ২০১২ সালে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘসূত্রতায় প্রকল্পটির কাজ বিলম্বিত হওয়ায় মহাসড়কে খানাখন্দ, সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় সৃষ্ট যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রওশন সড়ক এলাকার বাসিন্দা আবদুল হালিম। চাকরি করেন ঢাকার বনানী এলাকায়। তিনি বলেন, সড়কে যানজট হবে ভেবেই এক ঘণ্টা আগে বের হন। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে সকাল ছয়টায় বাসে উঠে উত্তরা আবদুল্লাহপুর পৌঁছেছি সকাল নয়টায়। তিন ঘণ্টা বাসে বসে থেকে একেবারে নাজেহাল হতে হয়।
কোনাবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, গাজীপুরের ভোগড়া এলাকা থেকে টঙ্গী স্টেশন রোড পর্যন্ত যেতেই আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। সড়কের দুই পাশ দিয়ে পানি জমে থাকায় বাস থেকে নেমে হেঁটে যাওয়ার উপায় থাকে না।
বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এবং অতিবৃষ্টির কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে যায়। এতে যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারে না।
মেহেদী হাসান, সহকারী কমিশনার, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (ট্রাফিক) ট্রাফিক পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মহাসড়কে চলমান কাজ ও বৃষ্টির কারণে প্রায় দিনই যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে শিল্পনগরীর হাজার হাজার অফিসগামী মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তিতে। যানজটের কারণে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যাওয়ারও উপায় থাকে না। সড়কের দুই পাশে জমে থাকে পানি।
তবে এই জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আগামী রবিবার থেকে ঢাকা-গাজীপুর-ঢাকা রেলপথে বিশেষ ট্রেন চালুর কথা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন ঘোষণার কথা জানান তিনি।
এদিকে ফেসবুক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তাটিকে যানজটমুক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিআরটি প্রজেক্ট আমাদের উপহার হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারদের ক্রমাগত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে অনেক বছর ধরে ধীর গতিতে কাজ করায় মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা নেই, আবার যখন বর্ষাকালে এই দুর্ভোগ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। বিআরটি প্রজেক্টে দায়িত্ব পালনরত সচিব, পিডিসহ সবাইকে প্রায় প্রতিদিনই কয়েকবার করে ফোন করছি যাতে টঙ্গী-গাজীপুরবাসীসহ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী প্রায় ৩৭ জেলার মানুষদের এই দুর্ভোগের হাত থেকে দ্রুত রক্ষা করা যায়। সিটি করপোরেশন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন। দুর্ভোগের হাত থেকে মানুষদের কিছুটা হলেও রক্ষা করতে আজ রাতে রেলমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে আগামী রবিবার থেকে গাজীপুর থেকে টঙ্গী হয়ে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে টঙ্গী হয়ে গাজীপুর পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন মহোদয় এর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।