পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: দালালের কাছে জিম্মি রোগীরা

পুঠিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২১, ০৬:৪৮ পিএম

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা দালাল ও ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। রোগীরা চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসামাত্র করিডোরে অবস্থানরত ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা ব্যবস্থাপত্র দেখতে কাড়াকাড়ি শুরু করেন। অন্যদিকে, প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা রোগীদের ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে জোর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহে তিনদিন দুপুর ২টার পর চিকিৎসকদের সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের দেখা করার অনুমতি রয়েছে। নির্ধারিত এই সময়ের বাইরে অন্য সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিক্রয় প্রতিনিধিরা কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। এমনকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানার মধ্যেও কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি ও প্রাইভেট ক্লিনিক- ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালেরা বা প্রতিনিধিরা অবস্থান করতে পারবেন না। কিন্তু নিয়ম মানছেন না কেউই।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালের সামনে প্রায় ১ ডজন প্যাথলজি সেন্টার ও ক্লিনিক রয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা এখানে কাজ করেন। যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে সেখান থেকে ডাক্তার ৪০ শতাংশ কমিশন ভোগ করেন। প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ডাক্তারদের এ কমিশন দেয়া হয়। দেখা যায়, একজন ডাক্তার ৩০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন পেয়ে থাকেন।

এদিকে সরকারি হাসপাতালটি ঘিরে শুধু পুঠিয়া সদরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে প্রায় ডজনখানেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। সেগুলোর অধিকাংশই অনুমোদনবিহীন। তাছাড়া সেগুলোতে নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, নেই কোনো টেকনিশিয়ান। শুধু অনুমানের ভিত্তিতে দেয়া হচ্ছে পরীক্ষার রিপোর্ট। এছাড়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা, একই রুমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, খাওয়া-দাওয়া ও টয়লেট ব্যবহার করা হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মতিন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। তবে ভুক্তভোগী রোগী বা তাদের স্বজনদের কেউ অভিযোগ করলে মোবাইল কোর্ট করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh