ত্রিপুরায় গরুচোর সন্দেহে ৩ মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২১, ০৮:১৯ এএম

ভারতের একটি ‘গোরক্ষক বাহিনী’। ফাইল ছবি (বিবিসি)

ভারতের একটি ‘গোরক্ষক বাহিনী’। ফাইল ছবি (বিবিসি)

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গাড়িতে করে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় তিন মুসলিম যুবককে গ্রামবাসীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে রাজ্যটির পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে খোয়াই জেলায় গত রবিবার (২০ জুন) ভোররাতে।

গরু বা গরুর মাংস বহন করার অভিযোগে মুসলিমদের পিটিয়ে মারার ঘটনা এর আগে ভারতের নানা প্রান্তে ঘটলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটিতে এই ধরনের ঘটনা একেবারেই বিরল।

পুলিশ দাবি করেছে, নিহত যুবকদের গ্রামবাসীরা গরুচোর বলে সন্দেহ করেছিল। এ হত্যার ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।

গণপিটুনিতে নিহতরা জায়েদ হোসেইন (৩০), সাইফুল ইসলাম (১৮) ও বিল্লাল মিঁয়া (২৮) বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় তেলিয়ামুড়া থানার ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রবিবার ভোররাতে একটি ভ্যানে করে গোটাপাঁচেক গরু ও মহিষ নিয়ে যাওয়ার সময় এই তিনজন গ্রামবাসীদের নজরে পড়ে যায়।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা গরু-মহিষ চুরি করে পালাচ্ছে এই সন্দেহে স্থানীয় গ্রামবাসীরা তাদের গাড়িটিকে ধাওয়া করে এবং উত্তর মহারানিপুর নামে একটি গ্রামের কাছে ভ্যানটিকে ধরেও ফেলে। দুইজনকে সেখানেই নৃশংসভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। একজন সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হলেও তিনিও প্রাণে বাঁচতে পারেননি। একটু দূরে মুঙ্গিয়াকামি নামে আর একটি গ্রামের কাছে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকেও ধরে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডে দুটি আলাদা গণপিটুনির মামলা নথিভুক্ত করা হলেও গতকাল সোমবার (২১ জুন) বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে নিহত জায়েদের মা দাবি করেছেন, তার ছেলে কোনো গরু পাচার বা অপরাধের সাথে কখনোই যুক্ত ছিল না।

রাজধানীর জিবি পন্থ হাসপাতালে সাংবাদিকদের তিনি জানান, শনিবার বিকেলে তার ছেলে বন্ধু বিল্লাল মিঁয়ার সাথে কোনো একটা কাজে বেরিয়েছিল - কিন্তু কোথায় গেছিল সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই।

উত্তর বা মধ্য ভারতে তথাকথিত গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডবের ও মুসলিমদের পিটিয়ে মারার বহু ঘটনা এর আগে শোনা গেলেও ত্রিপুরায় এধরনের ঘটনার কথা আগে তেমন শোনা যায়নি। ফলে তিন মুসলিম যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনা রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বকেও বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে।

ত্রিপুরায় বিজেপির মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী বলেছেন, কোনো সন্দেহ নেই ঘটনাটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। মানুষের কখনো আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া উচিত নয়। বিজেপি কখনোই এ ধরনের আচরণকে সমর্থন করবে না এবং সরকার এই হত্যার যথাযথ তদন্ত করবে। -বিবিসি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh