কসমেটিক্সের ভয়ঙ্কর বিষ শরীরে থেকে যায় আজীবন : গবেষণা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২১, ১১:৪২ এএম | আপডেট: ২৪ জুন ২০২১, ১১:৪৬ এএম

প্রসাধন সামগ্রী

প্রসাধন সামগ্রী

যেসব বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থে মানবদেহের ক্ষতি হয়, ধীরে ধীরে শরীরে বাসা বাঁধে ক্যানসারের মতো নানা ধরনের জটিল রোগ, প্রসাধন সামগ্রীর অর্ধেকের মধ্যেই রয়েছে সেই রাসায়নিক পদার্থ। এর জন্য মানবদেহের যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয় তার কোনোটাই নিরাময়যোগ্য নয়।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি গত ১৫ জুন প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’তে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, সেই ভয়ঙ্কর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থগুলো যৌগিক পদার্থের যে শ্রেণিতে থাকে, তার নাম ‘পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল সাবস্ট্যান্সেস’ (পিএফএএস)। এগুলো ফ্লোরিনঘটিত যৌগ। এগুলো প্রসাধন সামগ্রীর মাধ্যমে একবার ত্বকে এলে বা মানবশরীরে ঢুকে পড়লে দেহের ভেতরে থেকে যায় দীর্ঘ দিন। 

অনেকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, মৃত্যুর সময় পর্যন্ত রাসায়নিকগুলো রয়ে গেছে শরীরে। যদি কোনোভাবে সেগুলো মানবদেহ থেকে বেরিয়েও আসে, তাহলেও সেগুলো প্রকৃতি-পরিবেশে থেকে যায় শতাব্দীর পর শতাব্দী। ওই বিষাক্ত পদার্থগুলোর কোনো ক্ষয় হয় না।


যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের নটরডেম ইউনিভার্সিটির রসায়নবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী গ্রাহাম পিসলি বলেছেন, পিএফএএসের কোনোকিছু ভাল বলে জানা নেই। 

পিসলি ও তার দল যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ২০০টির বেশি প্রডাক্টের উপর প্রথমবারের মতো পরীক্ষা করে দেখেছেন, সবগুলোতেই ৫২ শতাংশের বেশি উচ্চমাত্রার ফ্লোরিনঘটিত যৌগ ছিল। যা পিএফএএসের উপস্থিতি নির্দেশ করে।   

পিসলি ও তার দল ২৩১টি কসমেটিক্সে পিএফএএসের প্রধান উপাদান ফ্লোরিন কতটুকু পরিমানে আছে তা পরীক্ষা করে দেখেন।

এতে দেখা গেছে, লিপস্টিক, গ্লসেসসহ ঠোঁট মাখার যাবতীয় প্রসাধন সামগ্রীতে পিএফএএস গোত্রের পদার্থ থাকে কম করে ৫৫ শতাংশ। তরল লিপস্টিকে ৬২ শতাংশ, ফাউন্ডেশনে (লিকুইড ও ক্রিম) ৬৩ শতাংশ, কনসিলারে ৩৬ শতাংশ, অন্যান্য ফেস প্রোডক্টে (ব্লাশ, ব্রোঞ্জার) ৪০ শতাংশ। সব ধরনের মাস্কারায় ৪৭ শতাংশ আর ওয়াটারপ্রুফ মাস্কারায় ৮২ শতাংশ। চোখে যে প্রসাধন সামগ্রী (আইশেড, আইলাইনার) ব্যবহৃত হয়, সেগুলোতে এই সব পদার্থ থাকে ৫৮ শতাংশ।

গবেষকরা বলেছেন, এমন কোনো পিএফএএস পদার্থ নেই, যা এই নিয়মের ব্যতিক্রম। অথচ বাজারে চালু প্রসাধন সামগ্রীগুলোর অর্ধেকেরও বেশি ক্ষেত্রে এই সব পদার্থেরই থাকে মাত্রাধিক্য। 

পিসলি বলেন, মেকআপে পিএফএএসের সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু মেকআপ ধোয়ার পর তা খাওয়ার পানিতে প্রবেশ করতে পারে। এর মাধ্যমেও তা মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এতে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি, এই যৌগগুলো শরীরের অন্যান্য পিএফএএস, যেমন পার্ফ্লুরোওকটানোয়িক অ্যাসিডে পরিণত হতে পারে। এতে ক্যানসার ও কম ওজনের শিশু জন্মের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। - সায়েন্সনিউজ ও আনন্দবাজার পত্রিকা

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh