ঈদ ষোল আনা অথচ উৎসব ভাতা চার আনা!

মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মাস্টার

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২১, ০৯:৩২ পিএম

ঈদ ষোল আনা অথচ উৎসব ভাতা চার আনা!

ঈদ ষোল আনা অথচ উৎসব ভাতা চার আনা!

কিছু কথা আছে কখনই বিস্মৃত হওয়া যায় না। একজন কলম সৈনিক হিসেবে যতটুকু মনে পড়ে, বিশ্ববেরণ্য চিন্তাবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় একটি নিরেট সত্য তুলে ধরে বলেছিলেন, “বাংলাদেশের একটি মানুষও যদি কষ্টে থাকে তবে বাবার (বঙ্গবন্ধুর) আত্মা কষ্ট পাবে।” এর চেয়ে সত্য বচন দ্বিতীয়টি আছে বলে আমি মনে করি না। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিল, শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলা। এদেশের ভূখানাঙ্গা ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। তাদের অধিকার আদায়ের জন্যই তিনি লড়াই করেছেন, জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় জেলে অন্তরীণ থেকেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি নিজে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন এবং জাতিকেও স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। আপনি পেরেছেন, পারেন এবং পারবেন। আপনাকে ছাড়া এদেশে কোন কিছুই হয় না। সবকিছুতেই আপনার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে। কথাটি আপনার মনোপুত না হলেও দেশের মানুষ তাই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। তাই আমরা হতাশাগ্রস্ত ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩ শত ৩০ জন এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারি আপনা পানে চেয়ে আছি। আমরা আপনার সুদিষ্টি কামনা করছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিরা আজ অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন। তাদের হৃদয়ে আজ রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আপনার দেয়া ৫% ইনক্রিমেন্টের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটেতই অতিরিক্ত ৪% কেটে নেয়া হচ্ছে বাড়তি কোন সুবিধা প্রদান ব্যাতিরেকেই। অপ্রিয় হলেও সত্য আমরা মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা পাই! আমাদের বাড়ি ভাড়া মাত্র ১০০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা, বিনোদন ভাতা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা একেবারেই পাই না। আমাদের চাকরিতে কোন বদলি নেই, যেখানে শুরু সেখানেই শেষ!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরাও মানুষ! কষ্ট আমাদেরও লাগে। একই সিলেবাস ও একই কারিকুলাম পড়িয়ে সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা পাবে ১০০% উৎসব ভাতা আর আমরা ২৫%, তাতে কষ্ট লাগারই কথা। 

বিগত ১৭ বছর যাবৎ আমরা এ কষ্ট লালন করে আসছি। ঈদ সবার জন্য একই রকম। ঈদ ষোল আনা অথচ উৎসব ভাতা চার আনা! সত্যিই অনভিপ্রেত। তারা পাবে বেতন আমরা পাবো অনুদান! এ কষ্ট হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়। তাই আপনার নিকট প্রত্যাশা এমন কষ্টের ঈদ যেন আমাদের জীবনে আর না আসে। আমাদের কষ্টে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধুর আত্মা কষ্ট পাবে। আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে নেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা তো আছে। তাই আমাদের কষ্ট লাঘবে আমরা আপনাকে ত্রাণকর্তা হিসেবে পেতে চাই। আগামী ঈদে শতভাগ উৎসব ভাতা পাবো এ প্রত্যাশা আমাদের।

লেখকঃ প্রধান শিক্ষক, পীর কাশিমপুর আর এন উচ্চ বিদ্যালয়, মুরাদনগর, কুমিল্লা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh