মেসি ম্যাজিকে কোপার সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২১, ১০:০১ এএম

জয়ের পর মেসিদের উচ্ছ্বাস। ছবি : এএফপি

জয়ের পর মেসিদের উচ্ছ্বাস। ছবি : এএফপি

ইকুয়েডরকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা। তিনটি গোলেই ছিল  লিওনেল মেসির অবদান। প্রথম দুটি গোল সতীর্থকে দিয়ে করিয়েছেন। পরের গোলটি করেছেন দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিক থেকে। সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়াকে একটা বার্তাও দিয়ে রাখলেন।

ব্রাজিলের গোইয়ানিয়ার অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রবিবার (৪ জুলাই) সকালে অনষ্ঠিত কোয়ার্টার-ফাইনালে জয় পায় লিওনেল স্কালোনির দল। এই জয়ে টানা চতুর্থবারের মতো শেষ চারে গেল আর্জেন্টিনা।

প্রথমার্ধেই দলকে এগিয়ে দেয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন মেসি। ২২ মিনিটের মাথায় গোলের সামনে ইকুয়েডরের গোলরক্ষককে হারনান গালিন্দেজ একা পেয়েও বারে মারেন তিনি। নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ২ মিনিটের মধ্যেই আক্রমণে উঠে আসে ইকুয়েডর। ঝেগসন মেন্ডেজের জোরালো শট বাঁচিয়ে দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

দুই দলই একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকে, কিন্তু বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হয় বার বার। কখনো বল বাইরে মারে, কখনো গোলরক্ষকের হাতে জমা পরে আবার কখনো উড়ে আসা ক্রসে পা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। প্রথমার্ধ যখন গোলশূন্য ভাবেই শেষ হবে বলে ধরে নিয়েছিলেন সমর্থকরা, তখনই দুই দলের মধ্যে তফাৎ গড়ে দেন আর্জেন্টিনার রদ্রিগো ডি পল।

৪০ মিনিটের মাথায় মেসির বাড়ানো থ্রু বলে ইকুয়েড দলের রক্ষণ কেটে যায়। সেই বল ছিল গঞ্জালেসের উদ্দেশে। কিন্তু গঞ্জালেস সেই বলকে দিশা দেখাতে পারেননি। তাকে আটকাতে উঠে আসেন গোলরক্ষক গালিন্দেজ। ফের বল চলে আসে মেসির পায়। এবার তিনি খুঁজে নেন ডান প্রান্ত দিয়ে উঠে আসা ডি পলকে। গোল অরক্ষিত রেখে উঠে যাওয়া গালিন্দেজ ফিরতে পারেননি। প্রায় ফাঁকা গোল বল ঢুকিয়ে দেন ডি পল।

ওই গোলের পরেই যেন বাঁধ ভেঙে যায় ইকুয়েডর রক্ষণে। আক্রমণ বাড়তে থাকে মেসিদের। ৪৫ মিনিটের মাথায় ফের সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। এবার সুযোগ নষ্ট করেন গঞ্জালেস। মেসির ফ্রি কিকে মাথা ছোঁয়ান তিনি। প্রস্তুত ছিলেন গালিন্দেজ। আটকে দেন সেই আক্রমণ। ফিরতে বলে ফের শট নেন গঞ্জালেস। এবারেও ইকুয়েডরের পরিত্রাতা গালিন্দেজ।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ে ইকুয়েডরের। একের পর কর্নার পায় তারা। আর্জেন্টিনার রক্ষণে চাপ তৈরি করতে থাকে। যদিও গোলের মুখ খুলতে পারেনি।

আজকের ম্যাচে সার্খিয়ো আগুয়েরো, অ্যাঞ্জেলো দি মারিয়া, অ্যাঞ্জেল কোরিয়াদের প্রথম একাদশে রাখেননি কোচ স্কালোনি। ইকুয়েডরের আক্রমণ বাড়তে থাকলে ৭০ মিনিটের মাথায় দি মারিয়া ও গুইদো রডরিগেজকে নামিয়ে মাঝ মাঠের দখল নিতে চায় আর্জেন্টিনা। স্কালোনির সেই পরিকল্পনা কাজে লাগে। মেসি ও দি মারিয়ার যুগল বন্দিতে আক্রমণের ঢেউ ওঠে ইকুয়েডরের বক্সে। বক্সের বাইরে থেকে মারা মেসির শট অল্পের জন্য বাইরে না গেলে ২-০ হয়ে যেত ৭৩ মিনিটের মাথায়।

ইকুয়েডরের রক্ষণের ভুলে ২-০ করে আর্জেন্টিনা। গোলরক্ষকের বাড়ানো বল তাকেই ফিরিয়ে দিতে গিয়েছিলেন ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পিয়েরো হিনক্যাপি। তাড়া করেন মেসি ও দি মারিয়া। বলের দখল নেন মেসি। বল বাড়িয়ে দেন মার্টিনেজের উদ্দেশে। সেই বল গোলে ঠেলতে ভুল করেননি তিনি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আর্জেন্টিনা।

দি মারিয়া ও মেসির জুটিকে আটকাতে তখন নাভিশ্বাস উঠছে ইকুয়েডর রক্ষণে। বক্সের মাথায় দি মারিয়াকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করেন হিনক্যাপি। লাল কার্ড দেখেন তিনি। ফ্রি কিক থেকে গোল করতে ভুল করেননি মেসি। বক্সের একদম ওপর থেকে কিক নিলেন মেসি। বাঁকানো শটটি পোস্টের একদম কোনা ঘেষেঁ জালে ঢুকেছে। টুর্নামেন্টে মেসির চতুর্থ গোল ঠেকানোর কোনো উপায় ছিল না গালিন্দেজের।

এদিনই আরেক কোয়ার্টার-ফাইনালে টাইব্রেকারে উরুগুয়েকে হারায় কলম্বিয়া। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতেছে কলম্বিয়া। নির্ধারিত সময় ছিল গোলশূন্য ড্র।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh