বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২১, ০৫:৩০ পিএম
বাগেরহাট সদর হাসপাতাল
বাগেরহাটে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে করোনা সংক্রমিত রোগী। প্রতিদিনই নতুন করে শনাক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গেল কয়েকদিন ধরে শনাক্তের হার গড়ে একশোর উপরে রয়েছে।
রবিবার (৪ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত বাগেরহাট সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ৫০ শয্যার ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগী ভর্তি রয়েছে ৫৬ জন। সংকট পূরণে খুলনা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আনা হয়েছে চিকিৎসক ও নার্স। এরপরেও থামছে না রোগী ও স্বজনদের হাহাকার। সংকটের মধ্যে রোগীদের সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন এমন দাবি করেছেন সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির।
করোনা সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য ২০২০ সালের দিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ৫০ শয্যার ডেডিকেটেড হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। রোগীদের সেবা দিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেয়া হয়। স্থাপন করা হয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট। আইসিউ সুবিধা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় তিনটি আইসিউ শয্যা প্রদান করেন। কিন্তু প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে এই হাসপাতালে এখনো আইসিউ সুবিধা চালু করতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। মুমূর্ষু রোগীদের আইসিউ সেবা দিতে না পারায় স্থানান্তর করতে হচ্ছে খুলনাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে। লকডাউনের মধ্যেও রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্ধারিত শয্যার থেকে ২০টি শয্যা বৃদ্ধির প্রস্তুতি নিয়েছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, করোনা রোগী ও রোগের লক্ষণ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী বেড়েছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৫৬ জন কোভিড আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এসব রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে খুলনা থেকে ৬ জন নার্স এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে অতিরিক্ত চারজন চিকিৎসক এনেছি। তারা সেবা দিচ্ছেন। তারপরও আমরা হিমশিম খাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, গেল ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাটে ৩৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ১৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই হিসেবে শনাক্তের হার ৫৪ শতাংশ। এটা খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতি। পরিস্থিতি যদি আরো বেশি খারাপ হয়, তাহলে আমাদের পক্ষে সেবা দেয়া অনেক কঠিন হবে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে আরো বেশি সচেতন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া সকলকে ঘরে থাকার আহবান জানান তিনি।
বাগেরহাটে করোনার বর্তমান পরিস্থিতি
গেল ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাটে ৩৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ১৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় করোনা সংক্রামণ হার ৪৬ শতাংশ হলেও সদর উপজেলায় এই হার ৫৪ শতাংশ। এই সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৭৩ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ৮৯ জনের। সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ৭১৯ জন। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১ হাজার ৫৪ জন।