নিষিদ্ধ কয়েকটি সিনেমা

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২১, ০৩:৫৪ পিএম

থ্রি হানড্রেড, গ্রোটেস্ক ও দ্য এভিল ডেড সিনেমার পোস্টার

থ্রি হানড্রেড, গ্রোটেস্ক ও দ্য এভিল ডেড সিনেমার পোস্টার

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে সিনেমা নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। কখনো তা রাজনৈতিক কারণে, কখনো নৈতিকতার কারণে। অস্কার পুরস্কার জিতেছে, বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে- এমন সিনেমাকে নিষিদ্ধও করা হয়েছে। 

সাধারণত কোনো সিনেমাকে প্রাথমিকভাবে নিষিদ্ধ করা হলেও পরবর্তীকালে বিতর্কিত অংশের কাটছাঁটের পরই উন্মুক্ত করে দেয়া হয়  প্রদর্শনীর জন্য। পুরস্কার জয়, জনপ্রিয়তা, ব্যবসায়িক সাফল্যে অনেক সিনেমাই পুরো বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছে। আবার কখনো সেই সিনেমাগুলোই নিষিদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন দেশে। 

চলুন জেনে নিই সেরা আট নিষিদ্ধ সিনেমা সম্পর্কে।   

গ্রোটেস্ক  

ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৯ সালে। জাপানিজ স্ল্যাপ্টার হরর ঘরানার এই ছবির গল্প এক তরুণ যুগলকে ঘিরে, যাদের কিডন্যাপ করা হয় ডেট  থেকে এবং এরপরই তাদের ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। চোখ উপড়ে ফেলার মতো অনেক ভয়াবহ ফুটেজের কারণে এই ছবিকে নিষিদ্ধ করা হয় যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে।

মাইকি

১৯৯২ সালে মুক্তির পর থেকে আজ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ এই ছবি। ছবিতে থাকা নির্যাতন আর হত্যার কয়েকটি বীভৎস গ্রাফিক দৃশ্য ছাড়াও ১৯৯৩ সালের জেমস বুলজার হত্যার বাস্তবিক কাহিনী চিত্রায়ন করার কারণে নিষিদ্ধ হয় এই ছবির প্রদর্শনী। ছবির গল্প এগোয়- নয় বছর বয়সী সোশিওপ্যাথ মাইকি হল্টকে নিয়ে, যে হত্যা করে তার পালক মা-বাবাকে, একইসাথে তাদেরও যারা টের পেয়ে যায় মাইকির খুনে স্বভাব।

দ্য হিউম্যান সেন্টিপেড

মজার বিষয় হলো, এই ছবিটি প্রদর্শনের অনুমতিই পায় হাতে গোনা দুয়েকটি দেশে। এছাড়া পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এটি নিষিদ্ধ করা হয়। ছবিটিকে স্রেফ নির্মাতা টম সিক্সের ‘অসুস্থ’ চিন্তাভাবনার ফসল হিসেবেই বলে থাকেন বেশির ভাগ চলচ্চিত্র সমালোচক। ছবির গল্পে দেখা যায়- এক পাগলাটে বিজ্ঞানী কিডন্যাপ করেন তিনজন আমেরিকান পর্যটককে আর সার্জারির মাধ্যমে তাদের জুড়ে দেন একসাথে, যেখানে দুটি মানুষের সংযোগ, একজনের মুখ থেকে অন্যজনের পায়ুপথে। গল্পের নিষ্ঠুরতা আর অসুস্থ প্লটের জন্য ব্যাপক সমালোচিত ‘দ্য হিউম্যান  সেন্টিপেড’। পরবর্তীকালে এই ছবির দুটি সিক্যুয়েলও নির্মাণ করা হয়, সেগুলোও বিশ্বব্যাপী নিষিদ্ধ করা হয়।

এ সার্বিয়ান ফিল্ম

স্পেন, নরওয়ে ও ব্রাজিলে নিষিদ্ধ ‘এ সার্বিয়ান ফিল্ম’ নিঃসন্দেহে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম। চাইল্ড রেপ, ইনসেস্ট, নিক্রোফিলিয়া ও খুনোখুনির ছড়াছড়িকে নিষিদ্ধ করার পেছনে কারণ হিসেবে দেখানো হয়। ছবির গল্প এগোয়- একজন পড়তি বয়সের পর্নোস্টারকে ঘিরে, যে এই পেশা থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার বহুদিন পর অর্থাভাবে হঠাৎ করেই চুক্তিবদ্ধ হয় একটি বিশেষ ফিল্মের জন্য। কিন্তু পরিচালকের মনে খেলা করে ভিন্ন পরিকল্পনা আর তা যখন বুঝতে পারে এই অভিনেতা ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে অনেক। এখান  থেকে ফেরারও কোনো পথ থাকে না।

দ্য এভিল ডেড

১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি গল্প বলে পাঁচ বন্ধুর। ছুটি কাটাতে যারা যায় গভীর জঙ্গলের ভেতরে এক নির্জন কুটিরে। কুড়িয়ে পাওয়া একটি অডিওটেপ থেকে উদ্ভূত ভূতের আক্রমণে তাদের ছুটি পরিণত হয় ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে। কম বাজেটের এই ‘স্ল্যাশার’ ছবি প্রশংসিত হয় সমালোচক মহলে, বক্স অফিসেও পায় সফলতা। কিন্তু বিপত্তি বাধে এর অতিমাত্রায় গ্রফিক সহিংসতা আর ভয়াবহতার কারণে। ফিনল্যান্ড, জার্মানি আয়ারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে নিষিদ্ধ করা হয় ‘দ্য এভিল ডেড’।

দ্য টিন ড্রাম 

অস্কারে বিদেশি সিনেমা বিভাগে সেরা পুরস্কার পায় এই সিনেমা ১৯৭২ সালে। সিনেমায় দেখানো হয়- ১১ বছরের এক বালক ১৬ বছরের এক তরুণীর সাথে সেক্স করছে। এই জন্য কানাডা ও ফিলাডেলফিয়াতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। বলা হয়, এই সিনেমা চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ছাড়া বেশি কিছু নয়। কিন্তু সিনে বিশেষজ্ঞরা এই সিনেমাকে বড় নম্বর দিয়ে বলেছেন, ছবির বিষয়বস্তু ঠিকমত বুঝলে এটা নিষিদ্ধ কোনোভাবেই হওয়া উচিত নয়।

থ্রি হানড্রেড 

যুদ্ধের ওপর তৈরি হওয়া হলিউডের অন্যতম সেরা এই ছবি নিষিদ্ধ ইরান ও আরবের কিছু  দেশে। জাতিসংঘের কাছে এই ছবি নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে ইরান বলেছে, থ্রি হানড্রেড তাদের দেশকে অপমান করতে মার্কিনীদের একটা চক্রান্ত।

দ্য সিম্পসন মুভি 

গোটা বিশ্ব উপভোগ করেছে এই কার্টুন সিনেমা। কিন্তু মিয়ানমারে এক অদ্ভুত কারণে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এই সিনেমাকে। মিয়ানমার সরকারের অভিযোগ এই সিনেমায় হলুদ রঙকে প্রচার করা হয়েছে। হলুদ রঙ মিয়ানমার সংস্কৃতির কাছে নাকি অপমানকর।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh