‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ হচ্ছে’

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২১, ০২:১০ পিএম

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন বলেছেন, উচ্চশিক্ষায় আয়করের নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। করারোপ করা হলে একই মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে বাংলা ট্রিবিউন-ইউল্যাব আয়োজিত ‘উচ্চশিক্ষায় করারোপ’ বিষয়ে এক অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। 

উপাচার্য বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত। ট্রাস্ট আইন ১৮৮২ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীন পরিচালিত হওয়ায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান করযোগ্য নয়। কিন্তু ঠিক কি কারণে বা কি উদ্দেশ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপ করা হলো, তা বোধগম্য নয়। এই প্রস্তাব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। 

গত জুন মাসে বাজেট ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর প্রস্তাবিত কর আরোপের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতিও (এপিইউবি) এই প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনটি করোনা দুর্যোগের এই সময়ে আর্থিকভাবে অসচ্ছল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সরকারিভাবে অনুদান-প্রণোদনা দেয়ার দাবি করেছে। 

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এপিইউবি বলেছে,  মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলো কোম্পানি আইন ১৯৯৪–এর আওতায় লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ট্রাস্ট আইনে অলাভজনক হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এই দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর  সমভাবে আয়কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আইনের পরিপন্থী এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার সকল স্তরে সরকার বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো প্রকার সরকারি বরাদ্দ বা অনুদান পায় না।  শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, শিক্ষা সামগ্রী ও বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি কেনা, জমি কেনা এবং ক্যাম্পাস নির্মাণ সবই করতে হয় নিজস্ব অর্থায়নে। 

তিনি বলেন, করোনাকালে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এ অবস্থায় যখন তারা আর্থিক প্রণোদনা ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সহায়তার জন্য সরকারের কাছে বারবার আবেদন জানিয়ে আসছে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ ছাড়া কিছু নয়। 

বাংলা ট্রিবিউন-ইউল্যাব আয়োজিত অনলাইন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মুন্নি সাহা। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মিলন কুমার ভট্টাচার্য ও সেন্টার ফর এন্টারপ্রাইস অ্যান্ড সোসাইটির এক্সিকিউটিভ এমবিএর ডিরেক্টর  সাজিদ অমিত। 

উল্লেখ্য, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বিধায় এর আগে ২০১৫ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট আরোপ করা হলে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে তা রহিত করা হয়। -বিজ্ঞপ্তি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh