ইংলিশদের স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন ইতালি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২১, ০৪:২৮ এএম

শিরোপা জয়ের পর ইতালিয়ানদের উল্লাস।

শিরোপা জয়ের পর ইতালিয়ানদের উল্লাস।

ইউরোর ফাইনালে ইংল্যান্ডকে টাই ব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে ইতালি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ গোলে সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে কোনো দল গোল করতে না পারায় ফল নির্ধারিত হয় টাই ব্রেকারে। আর তাতেই ১৯৬৮ সালের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের স্বাদ পেল রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা।

টাই ব্রেকারে ইতালির পক্ষে প্রথম শট নেন ডমিনিকো বেরার্দি। নিঁখুত শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। এরপর ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইনের গোলে সমতায় আসে ইংল্যান্ড।

আন্দ্রে বেলোত্তি দ্বিতীয় শট মিস করলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ইংলিশরা। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার হ্যারি মিগুয়ের কোনো ভুল করেননি। বুদ্ধিদীপ্ত শটে পরাস্ত করেন ইতালিয়ান গোলরক্ষককে।

লিওনার্দো বোনুচ্চি তৃতীয় শটে গোল করে ইতালিকে সমতায় আনেন। এরপর ইংলিশ ফরওয়ার্ড মারকাস র‍্যাশফোর্ড মিস করলে জমে উঠে খেলা। 

ইতালির পক্ষে চতুর্থ শট নিতে এসে লক্ষ্যভেদ করেন ফেদরিকো বার্নারডেসি। এতে টাই ব্রেকারে ৩-২ গোলে এগিয়ে যায় ইতালি। তবে সেই চাপ সামলাতে পারেননি তরুণ ইংলিশ প্লে মেকার জেডেন সানচো। তার দুর্বল শট আটকে দেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডেনাররোমা। 

ম্যাচ হেলে পড়ে ইতালির দিকে, গোল করলেই শিরোপা ইতালির। কিন্তু অভিজ্ঞ জরগিনহোর শট ঠেকিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখেন ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড। 

ইংলিশ সমর্থকদের চোখ তখন বুকায়ো সাকার দিকে। কিন্তু টিনেজার সাকার শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে নায়ক বনে যান ইতালির গোলরক্ষক ডেনাররোমা।

এর আগে রবিবার রাতে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে খেলার দ্বিতীয় মিনিটেই ইতালির জালে বল জড়ান লুক শ। প্রথমার্ধের বাকি সময় এই গোল আর শোধ করতে পারেনি ইতালি।

ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে কর্নার কিক পায় ইতালি। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল ক্লিয়ারই করা নয় শুধু নিজেদের নিয়ন্ত্রণেও ধরে রাখে ইংল্যান্ড। উঠে যায় কাউন্টার অ্যাটাকে। ইতালির বক্সের ডান পাশ থেকে বাম পাশে লম্বা পাস দেন কিয়েরান ট্রিপিয়ার। দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা লুক শ ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শট নেন তাতে। মুহূর্তেই বলটি জড়িয়ে গেল ইতালির জালে।

১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে করা তার গোলটিই ইউরোর ফাইনাল ম্যাচে করা দ্রুততম গোল। ১৯৬৪ সালে পেরেদা ৬ মিনিটের মাথায় গোল করেছিলেন।

গোল হজম করার ৬ মিনিট পরেই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় ইতালি। কিন্তু ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেয়া ইনসাইনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ১৭তম মিনিটে এমারসন অফসাইডের আওতায় পড়লে ভেস্তে যায় ইতালির আক্রমণ।

২৮তম মিনিটে ইতালির ইনসাইনের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৩৫তম মিনিটে সিয়েসা সহজ সুযোগ নষ্ট করলে ব্যবধান কমাতে পারেনি ইতালি। যোগ করা সময়ে ভেরাত্তির আক্রমণ প্রতিহত করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটের মাথায় ইনসাইনের আক্রমণ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫৩তম মিনিটে ফের আক্রমণে ওঠে ইতালি। এবারও ইনসাইনের শট টার্গেটে ছিল না। দুই মিনিট পর ইংল্যান্ডের হ্যারি মিগুয়ের আক্রমণ করেন ইতালির বক্সে। কিন্তু তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৫৭তম মিনিটে ইনসাইন শট নেন ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে। আক্রমণ প্রহিত হয় পিকফোর্ডের দক্ষতায়।  ৬২তম মিনিটে ফের ইংল্যান্ডের পতন রোধ করেন পিকফোর্ড। একটু পর সিয়েসার আক্রমণও প্রতিহত করেন তিনি। ৬৭ মিনিটের মাথায় ভেরাত্তির হেডার প্রতিহত করেন ইংলিশ গোলরক্ষক।  

অবশেষে ৬৭তম মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণের জটলা থেকে গোল করেন বোনুচ্চি। যদিও শুরুতে শট ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন পিকফোর্ড। কিন্তু তাকে পরাস্ত করে ইউরোর ফাইনালে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ড গড়েন বোনুচ্চি। ৩৪ বছর ৭১ দিন বয়সে ইউরোয় লড়াইয়ে গোল করার রেকর্ড গড়লেন তিনি। ১৯৭৬ সালে পশ্চিম জার্মানির হয়ে হলজেনবেইন ৩০ বছর বয়সে গোল করেছিলেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh