দক্ষিণ আফ্রিকায় দাঙ্গা-বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ৭২

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২১, ১০:১৪ এএম

সহিংস বিক্ষোভ চলছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন শহরে।

সহিংস বিক্ষোভ চলছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন শহরে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় গত পাঁচদিন ধরে চলা দাঙ্গা, বিক্ষোভ ও লুটপাটের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। 

আর বিভিন্ন অপরাধীরা এ পরিস্থিতিতে সুযোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটি। জায়গায় জায়গায় লুঠ হচ্ছে দোকান, শপিং মল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এমনকি, ওয়্যারহাউস। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করেছেন প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা। তবে সেনা সদস্যরা রাস্তায় নামলেও বিক্ষোভ বন্ধ হচ্ছে না। 

দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট জুমাকে গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। আদালত জুমাকে একটি দুর্নীতিবিরোধী কমিটির সামনে বসতে বলেছিল। কিন্তু জুমা সেখানে যাননি। এরপরেই আদালত অবমাননার দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নিম্ন আদালত তাকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

জুমার গ্রেফতারের পরেই বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। বহু মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরোধিতা করতে শুরু করেন। কিন্তু অচিরেই বিক্ষোভ অন্য দিকে মোড় নেয়। একদল লোক বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে দোকানপাট লুট করতে শুরু করে। জায়গায় জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। 

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দীর্ঘ লকডাউনে হতাশ দেশের একটি অংশের মানুষ। তারা কাজ হারিয়েছেন। অন্যদিকে মূলব্যবৃদ্ধি অব্যাহত। সব মিলিয়ে মানুষের ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছিল। বিক্ষোভে সেই বিষয়টিই সামনে চলে এসেছে।

সবচেয়ে বিপর্যস্ত গওতেং ও কোয়াজুলু-নাটাল। গওতেংয়ের শহর হলো জোহানেসবার্গ, প্রিটোরিয়া। দফায় দফায় বিক্ষোভ চলছে এই দুই শহরে। ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এখানে। অন্যদিকে কোয়াজুলু-নাটালে জুমার বাসস্থান। সেখানেও বিক্ষোভ থামানো যাচ্ছে না। সরকারি হিসেবে সেখানে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গওতেংয়ের একটি শপিং মলে মঙ্গলবার লুঠ করার সময় পদপিষ্ঠ হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এক বিবৃতিকে জানিয়েছে, জোহানেসবার্গসহ বিভিন্ন শহরে গত পাঁচদিনের সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। তারা ১২ ব্যক্তিকে দাঙ্গার সন্দেহভাজন উসকানিদাতা বলে চিহ্নিত করেছেন। দাঙ্গা, লুটপাট ও সহিংসতার অভিযোগে ইতিমধ্যে এক হাজার ২৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত সোমবারই (১২ জুলাই) প্রশাসন জানিয়েছিল, সেনা নামানো হবে রাস্তায়। গতকাল বিভিন্ন শহরে সেনা পেট্রোলিং শুরু করেছে। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ থামেনি। 

এদিকে দোকানপাটের পাশাপাশি ডারবানে ওয়্যারহাউসেও লুটতরাজ চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। ডারবান দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় আমদানি-রফতানি কেন্দ্র। একাধিক ওয়্যারহাউস আছে সেখানে। স্থানীয় মিডিয়ার ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ধোঁয়া বেরচ্ছে একাধিক ওয়্যারহাউস থেকে।

সরকার জানিয়েছে, কঠোরভাবে বিক্ষোভের মোকাবিলা করা হচ্ছে। কোভিডে এমনিতেই অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। মাঝে তা খানিকটা চাঙ্গা করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু যেভাবে দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীরা লুঠপাট চালাচ্ছে ও সম্পত্তি নষ্ট করছএ, তাতে অর্থনীতির বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। বহু সময় লাগবে তা ঠিক করতে। - ডয়চে ভেলে

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh