সরকারের চাপে জোটে ভাঙন: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২১, ০৬:২৮ পিএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, সরকারের প্রচণ্ড চাপে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশ ২০ দলীয় জোট ছেড়েছে।

রবিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এমন দাবি করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, উনারা (জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ) বিরোধী রাজনীতিতে টিকতে পারছে না। সেকারণে চলে গেছে। এই কথা বললেই তো হয়- ‘প্রচণ্ড চাপে আমরা টিকতে পারছি না, মামলায় আমরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছি।’ সেটা না বলে কোনো ব্যক্তি বা কোনো দলকে দোষারোপ করা সঠিক কাজ নয়।

তিনি বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমরা দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাজনীতি করছি। ২০ দলেও যারা আছেন আমাদের সঙ্গে তারাও সেভাবে রাজনীতি করছেন। পারস্পরিক আস্থা আমাদের মধ্যে চমৎকার আছে।

এর আগে গত ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে ২০ দল ছাড়ার ঘোষণা দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া। এই অংশটি প্রয়াত আল্লামা নুর হোসেইন কাশেমীর অনুসারী। তবে ২০ দল রয়ে গেছে প্রয়াত মুফতি ওয়াক্কাসের অংশটি।

সেদিন বাহাউদ্দীন জাকারিয়া বলেন, ‘সম্প্রতি শরিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ও মতামত না নিয়ে বিএনপির একতরফাভাবে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া, বিএনপি মহাসচিবের শরিয়া আইনে বিশ্বাসী না হওয়ার বক্তব্য দেয়া, দেশব্যাপী আলেম-উলামাদের জেল-জুলুমের প্রতিবাদ না করা, দলের প্রয়াত নেতা আল্লামা নুর হোসাইন কাশেমীর ইন্তেকালের পর তার প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে সমবেদনা জ্ঞাপন না করা এবং তার জানাজায় অংশগ্রহণ না করায় জমিয়তের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমরা মনে করি ২০ দলীয় জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করাই জমিয়তের জন্য কল্যাণকর।

শরিয়া আইনে বিশ্বাসী না হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের সব জায়গাতে পরিষ্কার বলা আছে যে, আমরা শরিয়া আইনের কোনো বিরোধিতা করব না, শরিয়া আইনের বিরোধী কোনো আইন পাস করব না। আমরা সরকারে ছিলাম কোনো আইন পাস করি নাই। কিন্তু এই কথা বলা যায় কি, যে আমি শরিয়া আইনের বিরোধিতা করেছি। ইসলামি মূল্যবোধের বিরোধিতা করেছি। এসব কথা বলার অর্থ হচ্ছে যে, ব্যক্তিগত আক্রমণ করা। যেটা আমি মনে করি যে, উনারা ভালো কাজ করেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, উনারাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যাই হয়নি। আপনারা দেখবেন, ২০ দলের যে ঘোষণাপত্র ছিল সেটাতে বলা হয়েছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে একটা আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য একটা জোট এবং সেইভাবে এই আন্দোলন করেই নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপার ছিল। সেখানে কিন্তু শরিক যেকোনো দল তার নিজস্ব রাজনীতি করবে, তার নিজস্ব কথা বলবে। এখানে আরেকটা দলের রাজনীতি আরেক দলের ওপরে চাপিয়ে দেয়ার কোনো ব্যাপার নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রধান মাওলানা নুর হোসেইন কাশেমী সাহেব অত্যন্ত শ্রদ্বেয় মানুষ। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা করতাম। একজন সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক লোক বলতে যা বুঝায় তিনি ছিলেন। বড় আলেম, ইসলামি চিন্তাবিদও ছিলেন। উনি মারা যাওয়াতে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই।

নুর হোসেইন কাশেমীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে শোক বাণী প্রদান ও ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে আলেমদের গ্রেফতারের ঘটনায় একাধিকবার বিবৃতি প্রদান এবং সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh