নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২১, ০৬:৫০ পিএম
বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে কলকাতার বাজারগুলো এখন অনেকটাই ক্রেতাশূন্য। চিত্র: সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত বন্ধ। আর সীমান্ত বন্ধ থাকায় কলকাতার নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন বাজারে বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে বেচাকেনায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
প্রতিবছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি পর্যটক কেনাকাটা করতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা যান। বিগত তিন ঈদের মতো এবারও বাংলাদেশি ক্রেতাদের পদচারণা না থাকায় একসময় বাংলাদেশিদের কারণে মুখর হয়ে উঠা কলকাতার বাজারগুলো এখন অনেকটাই ক্রেতাশূন্য। বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে বিক্রিতে মন্দা যাচ্ছে কলকাতার ব্যবসায়ীদের। একসময় বাংলাদেশি ক্রেতাদের পদচারণে মুখর এলাকাগুলোতে ব্যবসা চাঙা ছিল। গত তিন ঈদের মতো এবারও বাংলাদেশি পর্যটকেরা কলকাতায় আসছেন না, তাঁদের অনুপস্থিতিতে মার্কেটগুলোর অনেকটাই ক্রেতাশূন্য।
গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ঈদুল আজহা সামনে রেখে অধিকাংশ বাজারই ফাঁকা। বিক্রেতারা পণ্যের পসরা নিয়ে বসলেও সেভাবে আসছেন না ক্রেতারা। কলকাতার নিউমার্কেট, জাকারিয়া স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, সদর স্ট্রিটের দোকানপাটে নেই সেই চিরচেনা ভিড়। ধর্মতলা থেকে গড়িয়াহাট, শিয়ালদহ থেকে রাজাবাজার, বেলগাছিয়া-পার্ক সার্কাস থেকে এন্টালি-খিদিরপুর—সর্বত্র একই চিত্র।
কলকাতা নিউ মার্কেটের নামী কাপড়ের দোকান ‘মিলন’। এর ব্যবস্থাপক চুনীভাই উমরানিয়া বলেন, ‘আমাদের এই দোকান বাংলাদেশিদের কাছে খুব জনপ্রিয়। আমাদের ক্রেতার ৮০ শতাংশই বাংলাদেশি। করোনার কারণে লকডাউন শুরু হওয়ার পর কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটক আসা বন্ধ হয়েছে। এখন স্থানীয় কিছু মানুষ আসছে। কিন্তু বিক্রিবাট্টা নেই বললে চলে।’
চুনীভাই বলেন, ‘আমাদের দোকান তো বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য ১২ মাসই জমজমাট থাকে। আর দুই ঈদে তো প্রচণ্ড ভিড় লেগে থাকে। এবার তা নেই। করোনায় আতঙ্কিত মানুষ।’
কাপড় ব্যবসায়ী ভূষণ গুপ্ত বলেন, ‘সত্যিই আমাদের এই নিউমার্কেট এলাকার দোকানপাট টিকে আছে বাংলাদেশের ক্রেতাদের জন্য। তারাই আমাদের মূল ক্রেতা। এখন বাংলাদেশি ক্রেতা নেই। আমরা হতাশ।’
শুধু মার্কেটগুলোই নয়, প্রতিবছর ঈদের সময় বাংলাদেশি ক্রেতাদের ভিড়ে ঠাসা থাকা হোটেলপাড়া এখন সুনসান। মার্কুইস স্ট্রিটের হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশি পর্যটক না আসায় হোটেল ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ও ধস নেমেছে।
এসব এলাকার আবাসিক হোটেল এখন কার্যত ফাঁকা। পর্যটক না থাকায় অধিকাংশ কর্মচারী ছুটিতে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। শুধু বাংলাদেশি নয়; ঈদের বাজার করতে ভারতের অন্য রাজ্যের মানুষও এবার কলকাতা আসেননি।