ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২১, ১২:৫২ পিএম
প্রতীকী ছবি
পরমায়ু বৃদ্ধির আশীর্বাদ কিংবা শুভেচ্ছা নিয়মিত মেলে। কিন্তু আয়ু বৃদ্ধি কী ডেকে আনছে স্নায়ু রোগ। ভারতের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের শিক্ষক-চিকিৎসক অতনু বিশ্বাস ও আরেক চিকিৎসক তাপস কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের গবেষণা এমনই ইঙ্গিত করেছে।
তাদের গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে।
ডা. অতনু বলেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, খাদ্যাভাস, শরীরচর্চা না করা ও সর্বোপরি বায়ু দূষণের কারণেই স্নায়ুরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আরো একটা কারণ হলো- গড় আয়ু বেড়ে যাওয়া। একজন বয়স্ক মানুষের স্নায়ু মরে গেলে সেটি আর তৈরি হয় না। এগুলো সারানোর ক্ষমতাও শরীরের থাকে না।
তিনি বলেন, যখনই স্নায়ুর ক্ষয় বেশি হয় তখনই বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এগুলো বয়সকালেই বেশি হয়। আর দীর্ঘদিন সেই রোগে আক্রান্ত থাকার ফলে সমাজেও তার প্রভাব পরে।
ওয়াশিংটনের ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ ও ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর সহযোগিতায় বিগত বছরগুলোতে ভারতের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্নায়ু রোগে আক্রান্ত ও তার প্রভাবের বিষয়ে সমীক্ষা চালান ওই দুই চিকিৎসক। পাশাপাশি আগেকার বিভিন্ন সময়ের পরীক্ষামূলক গবেষণার তথ্যকেও এই কাজে ব্যবহার করা হয়।
ডা. অতনু বলেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে- গত ৩০ বছরে সবচেয়ে বেশি স্ট্রোকের প্রভাব বেড়েছে। যিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন তার কথা আলাদা। কিন্তু যিনি কয়েক বছর ধরে ভুগছেন, তার পরিবার-পরিজনদেরও বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়েই সময় কাটাতে হচ্ছে। কারণ রোগীর যত্ন নেয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে পরিজনকে মানিয়ে নিতে হয়, তাতে অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিবর্তনও ঘটছে।
দুই চিকিৎসক দেখিয়েছেন, অনেক মানুষই সুগার, রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু তারা সেটাকে গুরুত্ব দিতে চান না। কেউ হয়তো আবার নিয়মিত ওষুধও খান না। এরই সাথে এক শ্রেণির মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা যুক্ত হয়ে ঘটায় ‘স্ট্রোক’। স্নায়ুঘটিত এই রোগের ফলে শুধু একটি মানুষ নন, প্রভাব পরে গোটা সমাজের উপরেই।
গবেষকরা জানান, ১৯৯০ সালে যতজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হতেন এখন সংখ্যাটা তার দ্বিগুণ হয়েছে। মাইগ্রেন, পার্কিনসন্স, অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়ার মতো স্নায়ু রোগেও আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে।