শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ হারলো ভারত

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২১, ০৮:৪৬ এএম

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার

ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে খেলতে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। অঘোষিত এই ফাইনালে, নিজের জন্মদিনেই কিনা নায়ক হওয়ার মঞ্চটা বেছে নিলেন হাসরাঙ্গা। তরুণ এই লেগ স্পিনারের ভেলকিতেই ভারত করতে পারল না একশ রানও। পরে ব্যাট হাতেও আলো ছড়িয়েছেন হাসরাঙ্গা, তাতেই শেষ ম্যাচটা সাত উইকেটে জিতে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজটা নিজেদের করে নেয় স্বাগতিক লঙ্কানরা, ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো।

নবদ্বীপ সাইনি চোট পেয়েছিলেন আগের ম্যাচে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ আর সতর্কতামূলক কোয়ারেন্টিনের কারণে ছিলেন না আরো ৮ জন। এই ম্যাচে অভিষেক হয় সন্দ্বীপ ওয়ারিয়রের। ফলে এই সিরিজে ভারতীয় দলে খেলা খেলোয়াড়ের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯-এ। দ্বিপক্ষীয় হোক কিংবা বহুজাতিক, কোনো সিরিজে এর চেয়ে বেশি খেলোয়াড় খেলানোর রেকর্ড নেই আর কোনো দলের।

করোনার কারণে আগের ম্যাচে কোনোমতে পাঁচ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলেছিল ভারত। নামল শেষ ম্যাচেও। তার ছাপ পড়েছিল আগের ম্যাচেও, যদিও শক্ত উদ্বোধনী জুটির কারণে কোনোক্রমে ১৩০ এর ঘর পেরিয়েছিল সফরকারীরা। শেষ ম্যাচে এর প্রভাবটা টের পাওয়া গেল আরো প্রকটভাবে। সাথে হাসরাঙ্গার রেকর্ডগড়া বোলিং তো ছিলই।

টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত। তবে ম্যাচে অধিনায়ক শিখর ধাওয়ানের সুখস্মৃতি কেবল সে পর্যন্তই। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিজেদের ইনিংসের চতুর্থ বলে দুশমন্থ চামিরার আউটসুইংয়ে অধিনায়ক ধাওয়ানকে হারায় দলটি। সেই যে শুরু দুঃস্বপ্নের, তা স্থায়ী হয়েছে দলটির ইনিংস শেষ হওয়া পর্যন্ত।  

আরেক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান দেবদূত পাড়িক্কল অবশ্য আশা দেখিয়েছিলেন ইনিংসের শুরুতে, চার মেরে খুলেছিলেন রানের খাতা। তবে তাকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি রমেশ মেন্ডিস, এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে উইকেট আদায় করে নেন। এরপরই শুরু হাসরাঙ্গা ভেলকির। প্রথম ওভারেই ফেরান সাঞ্জু স্যামসন, ও রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে। ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভারত তখন প্রমাদ গুণছে ঘোর বিপদের।

এরপর ভুবনেশ্বর কুমারকে সাথে নিয়ে নিতিশ রানা একটা চেষ্টা করেছিলেন পরিস্থিতি সামলানোর। কিন্তু তিনিও টিকতে পারলেন মাত্র চার ওভার। শানাকাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরলে ৩৬ রানে অর্ধেক ইনিংস শেষ হয় ভারতের। দলের টি-টোয়েন্টি সর্বনিন্ম রানের ‘রেকর্ড’টা ৭৪ রানের। সেটাও ভেঙে যায় কিনা সে শঙ্কাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল সাজঘরে।

সেটা এড়াতেই হয়তো, ভুবনেশ্বর ও কুলদ্বীপরা এরপর চেষ্টা করেছেন উইকেট বাঁচানোর। পরপর দুই ওভারে ভুবনেশ্বর ও বরুণ চক্রবর্তীকে ফেরান হাসারাঙ্গা। দুজনের মাঝে শানাকার শিকার হয়ে ফেরেন রাহুল চাহারও। তবে নিঃসঙ্গ সৈনিক হয়ে কুলদ্বীপ অপরাজিতই ছিলেন শেষ পর্যন্ত। তার ইনিংস সর্বোচ্চ ২৩ রানে কোনোমতে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড ভাঙা থেকে রক্ষা পায় ভারত। তবে অন্য একটা বিস্মরণযোগ্য রেকর্ড ঠিকই গড়ে ফেলে দলটি, লঙ্কানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ১০০ রান করতে ব্যর্থ হয় তারা।

জবাবে সতর্কভাবে ইনিংসের গোড়াপত্তন করে লঙ্কানরা। প্রথম উইকেটটা যদিও তারা হারায় ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই। রাহুল চাহারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে নিজে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আভিশকা ফার্নান্দো। এরপর আরেক থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান মিনোদ ভানুকাকেও ফেরান সেই চাহার, বোল্ড করে ফেরান সাদিরা সামারাবিক্রমাকেও।

তবে এরপর ধনাঞ্জয়া ও হাসরাঙ্গার দৃঢ় ব্যাটিংয়ে ভারতের ছুঁড়ে দেয়া মামুলি লক্ষ্য সহসাই পার করে ফেলে লঙ্কানরা। এর ফলে টানা আট সিরিজ অপরাজিত থাকা ভারতকে হারের বিস্বাদ দিয়ে দুই বছর পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় শ্রীলঙ্কা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh