১৫ দিনে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ২৯৫ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২১, ১২:৪৬ পিএম

 সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলন

ঈদের আগে-পরে ১৪ থেকে ২৮ জুলাই ১৫ দিনে দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে ২৬২টি দুর্ঘটনায় ২৯৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৪৮৮ জন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণ গেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। তবে স্বল্পসময়ে পরিবহন চালু করায় এবার গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি করেছে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঈদের শুরুর দিন ১৪ জুলাই থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত (২৮ জুলাই) ১৫ দিনে মোট ২৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭৩ জন নিহত ও ৪৪৭ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে রেলপথে ৯টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন, নৌপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হয়েছেন, আরো ২১ জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে ২৩ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২৫ জুলাই থেকে সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমতে থাকে।

এবারের ঈদুল আজহায় বিধিনিষেধের কারণে মানুষের যাতায়াত সীমিত হলেও স্বল্পসময়ের জন্য গণপরিবহন চালু করায় সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা-ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক-পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানে গাদাগাদি করে মানুষ গ্রামে ফিরেছে। এতে গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিগত ছয় বছরে শুধু ঈদুল আজহায় মোট এক হাজার ২৮৮টি দুর্ঘটনায় এক হাজার ৫০০ নিহত ও চার হাজার ৩৫৬ জন আহত হয়েছেন।

সংগঠনটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরাবরের মতো এবারো দুর্ঘটনায় শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এরারের ঈদে মোট ৮৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত এবং ৫৯ জন আহত হয়েছেন। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৬.২৫ শতাংশ এবং আহতের ১৩.১৯ শতাংশ।

এ সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০৬ জন চালক, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৪ জন পথচারী, ৩৮ জন নারী, ৩১ জন শিশু, ১২ জন শিক্ষার্থী, তিনজন সাংবাদিক, পাঁচজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১২ জন শিক্ষক, ছয়জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং একজন প্রকৌশলীর পরিচয় মিলেছে। এর মধ্যে নিহত হয়েছেন দুইজন পুলিশ সদস্য, একজন সেনাবাহিনীর সদস্য, একজন বিজিবি, ২৭ জন নারী, ১৭ শিশু, নয়জন শিক্ষার্থী, নয়জন শিক্ষক, ৮৭ জন চালক, ১৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৩ জন পথচারী, তিনজন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

সংঘটিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২৮.৪৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৮.৭৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ কাভার্ডভ্যান-লরি, ৭.৪১ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৮.৬০ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ১০.৩৮ শতাংশ অটোরিকশা, ৭.৭১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল ও ৮.৬০ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিলো। দুর্ঘটনার ২৫.৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৪.২৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেয়ার ঘটনা, ১৮.৩৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ৭.৯১ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে ও ০.৮৩ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ০.৮৩ শতাংশ ট্রেন যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৩.৩৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৩.৩৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৮.৩৩ শতাংশ ফিডার রোডে এবং ০.৮৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৩৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৮৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে হয়েছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh