ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২১, ১০:৫২ এএম
জার্মানদের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ঐতিহাসিক কারণেই এক ধরনের ভীতি কাজ করে। ছবি : ডয়চে ভেলে
২০০৮ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় জার্মানিতে মূল্যস্ফীতি তিন শতাংশ ছাড়িয়েছিল। এরপর এক দশকের বেশি সময় ধরে কখনো জার্মান অর্থনীতি এত খারাপ অবস্থায় আসেনি। তবে বর্তমান অবস্থার জন্য শুধু করোনাভাইরাস মহামারি দায়ী নয়।
গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় এ বছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৩.৮ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার ফেডারেল পরিসংখ্যান ব্যুরো এ তথ্য জানিয়েছে।
সবশেষ ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি তিন শতাংশ ছাড়িয়েছিল। পরিসংখ্যান সংস্থা ডিস্টাটিস প্রাথমিক গণনার ওপর ভিত্তি করে এই তথ্য জানিয়েছে।
ডিস্টাটিস্টা বলছে, ২০২০ সালে ছয় মাসের কর অব্যাহতি এর একটি কারণ। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর পণ্যের চাহিদা কমে গেলে ভ্যাট ১৯ ও ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৬ ও ৫ শতাংশ করা হয়। এ বছরের শুরুতে দোকানপাট আবার খোলার পর আগের ভ্যাট হার পুনরায় চালু করা হয়।
জ্বালানির দাম আরেকটি কারণ। গত কয়েক মাস ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হারে বাড়ছে দাম। যেসব গ্রাহক জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করছেন তাদের জানুয়ারি থেকে প্রতি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমণের জন্য ২৫ ইউরো করে বাড়তি দিতে হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি পরিমাপে সাধারণত এক বছর আগের একই সময়ের সাথে পণ্য়ের মূল্যের তুলনা করা হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, কোনো পণ্য বা সেবার দাম সময়ের সাথে কতটা বেড়েছে মূল্যস্ফীতি দিয়ে তা বোঝা যায়।
মূল্যস্ফীতির পর বেতন না বাড়লে অনেকের ক্রয়ক্ষমতা কমতে পারে। জার্মানদের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ঐতিহাসিক কারণেই এক ধরনের ভীতি কাজ করে। চরম মূল্যস্ফীতির কারণে ১৯২০ সালের দিকে দেশটির অর্থনীতি প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল৷ এর ফলে রাজনীতিতেও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, যার ফলে ভাইমার রিপাবলিক ও পরবর্তীতে নাৎসি বাহিনী ক্ষমতায় আসে।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি দুই শতাংশ পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কোনো দেশের মূল্যস্ফীতি এর চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গেলে ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে।
জার্মানির পরিসংখ্যান সংস্থা অবশ্য জার্মানির সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতিকে সাময়িক ও মহামারি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া হিসাবেই দেখছে। তবে জার্মান মূল্যস্ফীতির ফলে ইউরো অঞ্চলে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থনৈতিক ভর্তুকি দেয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে।
অনেক বিশ্লেষকই বলছেন, আগামী মাসগুলোতে এই মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকবে। -ডয়চে ভেলে