নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২১, ০৯:২১ পিএম
হেলেনা জাহাঙ্গীর।
আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক উপকমিটি থেকে বহিষ্কৃত হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলাটির তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
রবিবার (১ আগস্ট) ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, গুলশান থানা থেকে মামলার তদন্তভার ডিবির স্পেশাল সাইবার ক্রাইম বিভাগে দেয়া হয়েছে।
সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী সাংবাদিকদের বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় রিমান্ডে থাকা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ডিবির কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনদিনের রিমান্ডের আজ দ্বিতীয় দিন।
এদিকে গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও পল্লবী থানায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে রবিবার গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গত ৩০ জুলাই রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তার গুলশানের বাসা থেকে আটক করে র্যাব। শুক্রবার রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দুটি এবং পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়। পরে গুলশান থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হেলেনাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে আছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের নামের সঙ্গে মিল রেখে নামসর্বস্ব সংগঠন ‘চাকরিজীবী লীগ’ নিয়ে সমালোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় র্যাব বৃহস্পতিবার অভিযান চালায়। অভিযানে তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, হরিণের চামড়া, বিদেশি মুদ্রা, ওয়াকিটকিসহ বিভিন্ন অবৈধ জিনিসপত্র জব্দ করা হয়।
সেই সঙ্গে তার মালিকানাধীন আইপি টিভি জয়যাত্রার অফিসেও অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানের পর র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, জয়যাত্রা টেলিভিশনের কোনো বৈধ কাগজপত্র তারা পাননি। কাগজপত্র না থাকলে সেটি বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার। জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন হেলেনা নিজেকে আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দেন।
হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটিতে সদস্য ছিলেন। কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগেরও উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠন। এটির কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নাম আসে হেলেনা জাহাঙ্গীরের। আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় মাহবুব মনিরকে। তাদের নাম-সংবলিত পোস্টার ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
সংগঠনটির দাবি, দুই-তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে তারা। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।