কায়েস সৈয়দ
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২১, ০৯:৫১ পিএম
প্রতীকী ছবি
কথা বলতে বলতে তুমি নদীর কাছে এসে থামলে আমিও থেমে গেলাম হাঁটতে লাগলাম স্মৃতির পাড় ধরে উল্টোপথে সে এক দীর্ঘ পথ হাঁটতে হাঁটতে হাজারোদিন পেরিয়ে দাঁড়ালাম একটা নদীর সামনে লক্ষ্যার পাড় ঘেঁষে হেঁটে যেতে যেতে শীতে গুটিয়েছে যে তার লেজ এ নদীই সেই নদী যার জলের ওপর বুক ভাসিয়ে আমার সাঁতার শেখা শহর উপশহর আর গ্রামের সাথে যোগসূত্র করা আমার বন্ধুরা সব সাঁতরে পাড়ি দিয়েছে এ নদী কিন্তু আমি আজও পারিনি আমার আজীবনের আক্ষেপ আমি দেখতে পাচ্ছি আমার সব স্মৃতিরা নদীর স্রোতে কুলকুল করে আমাকে আঁকড়ে ধরে স্মৃতির চুমু খাচ্ছে রমযানমাসে রাতে তারাবিনামায চুরি করে বন্ধুরা চলে আসতাম নদীর পাড়ে বসতাম কঙক্রিটের ঘাটলায় আমাদের কথা সে ঘাটলায় খইয়ের মতো ফুটতো শুনেছি এ নদী একসময়ে যোগান দিতো মিনারেল ওয়াটার তৃষ্ণার্ত বালকের কাছে ঝিনুকের মতো মেলে ধরতো মুক্তার মতো জিইয়ে রাখা লাবণ্যময়তার সবটুকু জল মাঝে মাঝে শুঁশুকের ডুবসাঁতার মাছেরা দলবেঁধে বেড়াতে আসতো আমাদের খালপাড়ে পলি দিয়ে সাজিয়ে যেতো গোবরলেপা উঠান এসব এখন উপকথা আমি জানি নদীগুলো আমাদের রক্তের শিরাউপশিরা আমি তাই তোমার চোখে আর জল গড়াতে দেখি না দেখি তীব্র বেগে রক্তের গড়িয়ে পড়া সে রক্তে মিশে আছে দুর্গন্ধ কারখানার বর্জ্য ডাইঙের রঙ ড্রেনের আবর্জনা ভাঙা প্লাস্টিক পরিত্যক্ত পলিথিন জাহাজের তেল মানুষের গু মুত কুকুরের পচা শরীর আর ভেসে ওঠা লাশ হঠাৎ তোমার শরীরের শিরাউপশিরা চৈত্রের জমিনের মতো ফেটে চৌচির সমস্ত শরীর জুড়ে রক্তের ফিনকি আমি জানি এ নদী শুকিয়ে গেলেও রক্তের ফিনকি থামবে না এ নদী মরে গেলেই মরে যাবো আমরা