মহেশখালীর রাখাইন তাঁতশিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন

তাহজীবুল আনাম, কক্সবাজার

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২১, ১১:০৪ পিএম

রাখাইন তাঁতশিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন

রাখাইন তাঁতশিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন

মহেশখালীতে আটশ’ পরিবার তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত। বাপ দাদার এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশা খুঁজছেন তারা। কাঁচামাল সংকট, পুঁজির অভাব, হাতে বোনা কাপড়ের ন্যায্য বাজারমূল্য না পাওয়াসহ নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে রাখাইন সম্প্রদায়ের হাতে বোনা তাঁত শিল্প বিলুপ্তির দ্বারপ্র্রান্তে।

বড় রাখাইনপাড়া ও লামারপাড়ার রাখাইন পল্লী ঘুরে দেখা যায় মাত্র ২টি পরিবারে শৈল্পিক কাপড় বোনার দৃশ্য। কাপড়ের ব্যাগ, চাদর, শাড়ি, লুঙ্গি, বেডশিট, তোয়ালা ও গামছা তৈরিতে এরা খুবই পারদর্শী। তাদের তৈরি কাপড় পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তাই কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের একটি বড় অংশ আদিনাথ মন্দির ও ও মহেশখালীর রাখাইন পল্লীগ্রামে বেশি সময় কাটান। বিশেষ করে রাখাইন তরুণ তরুণীদের অতিথি আপ্যায়ন মুগ্ধ করে পর্যটকদের। যদিওবা রাখাইনরা নিজেদের হাতে বোনা কাপড় খুবই সীমিত পরিসরে চলছে, তার পরও রাখাইন পল্লীগ্রামের শত শত নারী-পুরুষ সুদূর রাঙামাটি থেকে বিচিত্র বা রকমারি হাতে বোনা কাপড় এনে পসরা সাজিয়ে বসেছে রাখাইন পল্লী মার্কেটে। আকর্ষণীয় এই মার্কেটে শুধু হাতে বোনা কাপড়েই বিক্রি হয়।

রাখাইন মার্কেটের ঊর্মিমালা জানান, আমরা মাত্র বছর দুয়েক আগেও নিজেরা প্রতিটি ঘরে ঘরে কাপড় বোনে বিক্রি করতাম; কিন্তু কালক্রমে স্থানীয় শিল্পীরা নানান দৈন্যদশার কারণে কাপড় বুনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। তারপরও আমরা বাপ-দাদার পেশার ঐতিহ্য ধরে রাখতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে রাঙামাটি থেকে হলেও হাতে বোনা কাপড় এনে দোকানে বিক্রি করছি। আমার মতো সব রাখাইন আজ তাই করছে। অনেকে এ পেশা থেকে সরে গিয়ে স্বর্ণালঙ্কার তৈরি, বিপণন ও জেলে পেশায় চলে গেছে। বিশেষ করে পুরুষদের অধিকাংশ তো বটেই। আর মহিলারা বেশির ভাগই বেকার। 

মংপু ও মালি মং নামের এই দম্পতির বাড়িতে কাপড় বোনার দৃশ্য দেখা যায়। তারা বলেন, আমরাও বিকল্প পেলে এই পেশা ছেড়ে দেব। কারণ এ পেশায় পরিশ্রম আর পুঁজি বিনিয়োগ করে আমরা লাভ করতে পারছি না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ শিল্প কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে-না। 

রাখাইন সম্প্রদায়ের অন্যতম অভিভাবক মহেশখালী পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মং লায়েন বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন রাখাইন আদিবাসীদের এই পুরনো পেশায় ফিরিয়ে আনতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে বহুমুখী পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে সহযোগিতা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এর সুফল পাবে আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh