বছরে ৫০ কোটি টাকার রেণু পোনার ব্যবসা হয় লক্ষ্মীপুরে

জুনায়েদ আহম্মেদ, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২১, ০৩:৪৫ পিএম

বছরে ৫০ কোটি টাকার রেণু পোনার ব্যবসা হয় লক্ষ্মীপুরে

বছরে ৫০ কোটি টাকার রেণু পোনার ব্যবসা হয় লক্ষ্মীপুরে

লক্ষ্মীপুরে বছরে বিভিন্ন পুকুর, জলাশয় এবং মেঘনা নদী থেকে ৬৩ হাজার টন মাছ উৎপাদিত হয়। যার মধ্যে ৪২ হাজার টন মাছ ছিল চাষিদের উৎপাদিত কার্প জাতীয় সাদা মাছ। এ মাছ উৎপাদনে বছরজুড়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার রেণু পোনা মাছের ব্যবসা হয়। লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্যে এমনটি জানা গেছে। তবে স্থানীয় রেণু পোনা ব্যবসায়ীদের দাবি, লক্ষ্মীপুরে প্রতি বছর প্রায় ১শ কোটি টাকার পোনা মাছ কেনা-বেচা হয়।

রেণু উৎপাদন ও ব্যবসায়, সরকারি বেসরকারি হ্যাচারি, মৎস্য নার্সারি এবং মাছের খামারে প্রায় ৫-৭ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। লক্ষ্মীপুরে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে প্রতি বছর প্রায় ৩ হাজার কেজি বিভিন্ন জাতের রেণু পোনা উৎপাদিত হয়। প্রতি কেজি রেণু থেকে প্রায় ১ লাখ পোনা পাওয়া যায়। প্রতি কেজি রেণু জাত হিসেবে ২-১০ হাজার টাকায় নার্সারি ও খামারিদের নিকট বিক্রি করা হয়। নার্সারি মালিকরা কিছুদিন লালনের পর পোনা হিসেবে খামারি ও চাষিদের নিকট শত হিসেবে বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয় রেণু থেকে উৎপাদিত পোনা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কোটি কোটি মাছের পোনা আনা হয়। মাছের রেণু উৎপাদনের জন্য জেলায় ২টি সরকারি মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ৯টি তালিকাভুক্ত হ্যাচারি এবং ১০১টি মৎস্য নার্সারি রয়েছে। 

স্থানীয় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ওয়াহিদুর রহমান মজুমদার জানান, রায়পুর মৎস্য প্রজনন কেন্দ্রে চলতি বছর ১ হাজার ৫৩ কেজি রেণু এবং ১৮ লাখ পোনা উৎপাদিত হয়েছে। দেশের কার্পজাতীয় মাছের পোনার চাহিদার বড় একটি ভাগ রায়পুর হ্যাচারি থেকে মেটানো হয়। এ প্রজনন কেন্দ্রে ৭৫টি পুকুর এবং ১১ হাজার কেজি মা মাছ রয়েছে। এখানকার বেশির ভাগ মা মাছ হালদা নদী ও যমুনা নদী থেকে সংগ্রহ করা হয় বলেও জানা তিনি। সেখানে ১১ প্রজাতির কার্প এবং দেশীয় শিং, কৈ, ও পাঙ্গাস মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদিত হয়। 

মাছচাষি হাজি আলাউদ্দিন জানান, জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে ১০-১২ জন স্থায়ী পোনা ব্যবসায়ী আছে। 

জেলা ট্রাক মালিক সমিতির শ্রমিক মো. আবদুস সালাম জানান, বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে লক্ষ্মীপুরে গড়ে ৩০ ট্রাক পোনা মাছ আসে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাতিলে করে এনে এখানে পোনা বিক্রি করে অনেক ব্যবসায়ী। 

মাছচাষি হাজি আলা উদ্দিন জানান, পোনা হকারীদের মাধ্যমেও প্রতি মৌসুমে কয়েক কোটি টাকার পোনা বিক্রি হয়। এরা মূলত কুমিল্লা, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও লাকসাম থেকে এসে এখানে পোনা মাছ বিক্রি করে। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন জানান, জেলায় ৩৪ হাজার ১২৫ জন তালিকাভুক্ত মাছ চাষি এবং ৮ হাজার ১৭ হেক্টর জলাশয় রয়েছে। এসব চাষি ও জলাশয়ের মাছের জন্য প্রায় ৫০ কোটি টাকার পোনার ব্যবসা হয়। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh