ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২১, ১১:১৮ পিএম
ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি প্রায় ১৭ কোটি ডলার নিয়ে কাবুল থেকে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন তাজিকিস্তানে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত।
তাজিকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত মোহম্মদ জহির আগবার অভিযোগ করেছেন, গনি রবিবার যখন দেশ ছাড়েন তখন তার সাথে করে তিনি ১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার নিয়ে যান।
গনির আফগানিস্তান ত্যাগকে ‘দেশ ও জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে বর্ণনা করেন তিনি।
তিনি তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে আফগান দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন, তাজিকিস্তানে আফগানিস্তান দূতাবাস সাবেক ডেপুটি প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহকে আফগানিস্তানের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
গনি পালানোর সময় চারটি গাড়ি ও হেলিকপ্টারে করে বিপুল পরিমাণ অর্থও নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে কাবুলে রাশিয়ার দূতাবাস। দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ এই তথ্য জানায়।
কাবুলে রাশিয়া দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশচেঙ্কো বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তি ছিল চারটি গাড়ি, তাছাড়া একটি হেলিকপ্টারেও অর্থের একটি অংশ তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জায়গা না হওয়ায় অনেক অর্থ টারমার্কে ফেলে যায়।’
ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বর্তমানে আবু ধাবিতে রয়েছেন। এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতির বরাতে বুধবার (১৮ আগস্ট) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপি জানিয়েছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করছে যে মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তার পরিবারকে দেশে স্বাগত জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।’
গত রোববার তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে ঢোকার পর আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান গনি। দেশ ছেড়ে তিনি কোথায় গেছেন বা কোন দেশে আছেন সে সম্পর্কে কয়েকদিনে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। কয়েকটি দেশে তার যাওয়ার কথা শোনা যেতে শুরু করে।
প্রথম শোনা যায় তিনি তাজিকিস্তানে গেছেন। পরে জানা যায় উজবেকিস্তানে। এর পর দিন খবর আসে তাজিকিস্তান কিংবা উজবেকিস্তান নয় গনি চলে গেছেন ওমানে। তবে ওমান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত না করায় গনি কোথায় গেছেন তা নিয়ে ধোয়াঁশা তৈরি হয়।
২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট গনির এমন পলায়ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সরকারের মন্ত্রীরা পালিয়ে যাওয়ার জন্য তার সমালোচনা করেছেন। অনেকে বলছেন, ওইদিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা বলে গনি পালিয়ে যান।
দেশের মানুষকে তালেবানের হুমকির মধ্যে ফেলে দেশ ছাড়ার পর আশরাফ গনি এক ফেসবুক পোস্টে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছিলেন, ‘স্বদেশিদের মধ্যে রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া তার হাতে আর কোনো বিকল্প ছিল না’।