বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বয়ে বেড়াছে বাঘিয়ার নদী ও হিজল গাছ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২১, ০৮:৪৮ এএম | আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২১, ০৮:৫৮ এএম

সেই হিজল গাছটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে। ছবি : বাসস

সেই হিজল গাছটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে। ছবি : বাসস

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট  বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারের হত্যা করা হয়। নেমে আসে শোকের জোয়ার, এ শোক যেন বাঙালি জাতির মনে চিরদিনের।

বঙ্গবন্ধুর পৌত্রিক বাড়ির পিছন দিয়ে বয়ে যাচ্ছে বাঘিয়ার নদী। আর খালের পাশে এখনো দাঁড়িয়ে আছে হিজল গাছ। বঙ্গবন্ধুর গোসল আর সময় কাটানোর অনেক স্মৃতি বয়ে বেড়াছে বাঘিয়ার নদী ও হিজল গাছটি। কিন্তু শুধু নেই বঙ্গবন্ধু। হিজল গাছটি এখনো বঙ্গবন্ধুর অপেক্ষায় যেন দাঁড়িয়ে আছে।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছোট বেলা মা বাবা আদর করে ডাকতেন খোকা নামে। দূরন্তপানায় ছিল সবার থেকে অনন্য। বাড়ির  পিছন দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঘিয়ার নদীতে করতেন গোসল। সাথে থাকতেন সমবয়সীরা। দূরন্তপনায় যেন হার মেনে যেত নদীর স্রোতও। এ থেকে বাদ পরতো না হিজল গাছটিও। সমবয়সীদের সাথে নিয়ে গাছে উঠে করতেন লাফালাফি।

বড় হয়ে রাজনৈতিক জীবনের ব্যস্তার মাঝেও  টুঙ্গিপাড়ায় আসলে বিভিন্ন কাজের জন্য এখান থেকেই নৌকায় বের হতেন বঙ্গবন্ধু। এলাকার মানুষ আর বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতেন এখানেই। বঙ্গবন্ধু না থাকলেও সেই বাঘিয়ার নদী আর হিজল গাছটি আজও নানা স্মৃতির সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

শুধু বঙ্গবন্ধুই নয় এ নদীতে (বর্তমানে বাধানো ঘাট) তার বড় কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট কন্যা শেখ রেহানাও আসতেন ছোট বেলায়।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রাখতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী নদীর পাড় ও হিজল গাছের চারপাশ বাঁধাই করা হয়েছে। প্রতিদিনই জাতির জনকের স্মৃতিবিজরিত হিজল তলাসহ নদীটি পরিদর্শনে আসেন শত শত বঙ্গবন্ধুপ্রেমী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বয়সের দর্শনার্থীরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে আসেন।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত সেই নদীর পাড় ও হিজল গাছটি দাঁড়িয়ে আছে এখনো। নানা স্মৃতি বহন করে বছরের পর পর আপেক্ষায় রয়েছে বঙ্গবন্ধুর। কিন্তু নেই বঙ্গবন্ধু, আছে শুধু তার স্মৃতি।

দর্শনার্থীরা জানান, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থাপতি বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি, কিন্তু টুঙ্গিপাড়ায় তার অনেক স্মৃতি রয়েছে। তাই এখানে এসে বঙ্গবন্ধুর আদি পৈতৃক বাড়ি, ছেলেবেলার খেলার মাঠ, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় বালিশা আমগাছ, হিজলতলাসহ বিভিন্ন স্মৃতি ঘুরে ঘুরে দেখছি। যতই দেখছি ততই অন্যরকম একটা অনুভূতি উপলব্ধি করছি।

এলাকাবাসী আবু তাহের (৬৫), শেখ লুৎফর (৫৯) জানান, বাপ-দাদাদের কাছে শুনেছি ছোটবেলায় বঙ্গবন্ধু এ নদীতে গোসল করতেন। সাথে সমবয়সীরা। এসময় তিনি এ হিজল গাছে উঠে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়তেন।

টুঙ্গিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও বঙ্গবন্ধুর বন্ধু সৈয়দ নূরুল হুদা মানিকের ছেলে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পাশেই বয়ে যাওয়া বাঘিয়ার ছোট নদী ও ঘাটের হিজল গাছ অনেক স্মৃতি বহন করে চলেছে। এ হিজল গাছের নিচে নদীর ঘাটে বঙ্গবন্ধু গোসল করতেন। সেই হিজল গাছটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ও টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, বঙ্গবন্ধু ছোটবেলায় ছিল চঞ্চল প্রতিকৃতির। কিন্তু মানুষের দুঃখ-কষ্ট সইতে পারতেন না। সমবয়সীদের সাথে এ নদীতে গোসল করতেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি আর পদচিহ্ন ধরে রাখার জন্য বাঘিয়ার নদীর পাড় ও হিজল গাছের চারপাশ বাঁধাই করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। যাতে বঙ্গবন্ধু প্রেমীরা বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলা স্মৃতি দেখতে পারেন। -বাসস

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh