ডেঙ্গুর সাথে করোনা ও চিকুনগুনিয়ার লক্ষণের ৫ পার্থক্য

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২১, ১২:৫৭ পিএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২১, ১২:৫৯ পিএম

এ বছরও জুন মাস থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলছে। ছবি: সংগৃহীত

এ বছরও জুন মাস থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলছে। ছবি: সংগৃহীত

বর্ষা মৌসুমে প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে মশার সংখ্যা বেড়ে যায়। এ বছরও জুন মাস থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলছে। ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাসের মাধ্যমে। ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিনই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ৯৩০৪ জন।

শুধু জ্বর থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না যে জ্বরটি কিসের উপসর্গ। তাই জানতে হবে ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণগুলি কি কি। এ বিষয়ে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন বিভাগ) ডা. এম এস আরেফিন পাটওয়ারীর সাথে। তিনি ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান পাঁচটি লক্ষণ এবং তাদের সাথে চিকুনগুনিয়া ও করোনার লক্ষণের পার্থক্যগুলো কি তা জানিয়েছেন।

ডেঙ্গুর পাঁচটি প্রধান উপসর্গ
জ্বর: ডেঙ্গুর একটি প্রধান লক্ষণ হল জ্বর। সাধারণত জ্বরের মধ্য দিয়েই ডেঙ্গু্ রোগীর প্রথম লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে সাধারণত ৪-৫ দিন জ্বর থাকে। এই জ্বরের মাত্রা থাকে ১০২ ডিগ্রি- ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। দিন ও রাতে সারাক্ষণ শরীরে এই জ্বর থাকতে পারে।
কোভিড-১৯: সাধারণত ২-৭ দিন অল্প মাত্রার (১০০ ডিগ্রি- ১০১ ডিগ্রি ফা.) জ্বর থাকে।
চিকুনগুনিয়া: অল্প থেকে বেশি মাত্রার জ্বর ২-৪ দিন থাকতে পারে।

ব্যথা: ডেঙ্গুর আরেকটি লক্ষণ হল ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা হয়। ডেঙ্গুর কারণে সাধারণত মাথায়, চোখের পেছনে, মাংশপেশী, শিরদাঁড়ায় তীব্র ব্যথা হয়।
কোভিড-১৯: মাথা ও মাংশপেশীতে অল্প থেকে মাঝারী ব্যথা হয়।
চিকুনগুনিয়া: শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে তীব্র ব্যথা হয়।

র‍্যাশ ও রক্তক্ষরণ: র‍্যাশ ও রক্তক্ষরণ ডেঙ্গুর আরেকটি লক্ষণ। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নানা ধরণের র‍্যাশ উঠতে পারে। পাশাপাশি কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
কোভিড-১৯: র‍্যাশ ও রক্তক্ষরণ হয় না।
চিকুনগুনিয়া: অসুস্থতার ২-৩ দিনের মধ্যে র‍্যাশ উঠতে শুরু হয়, ৭ দিনের মধ্যে কমে যায়।

বমি ও পাতলা পায়খানা: ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষণ আক্রান্ত ব্যক্তির বমি ও পাতলা পায়খানা হওয়া। দিনে একাধিকবার বমি ও পাতলা পায়খানা হতে পারে। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই এটি হয়ে থাকে।
কোভিড-১৯: কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বমি বা পাতলা পায়খানা হতে পারে।
চিকুনগুনিয়া: সাধারণত বমি বা পাতলা পায়খানা হয় না।

রক্তচাপ কমে যাওয়া: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত প্রায় পঞ্চাশ ভাগ রোগীর রক্তচাপ কমে যায় এবং অল্প সংখ্যক রোগীর কিডনি, ব্রেইন, হার্ট বিকল হয়ে যেতে পারে।
কোভিড-১৯: সাধারণত রক্তচাপ কমে না কিন্তু ফুসফুস বিকল হয়ে যেতে পারে।
চিকুনগুনিয়া: রক্তচাপ কমে না, অর্গান বিকল হয় না।

যাদের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি:
১. যাদের আগে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছিল।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের কম।
৩. যাদের শরীরে রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট কম।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh