রাজস্ব ফাঁকি দিতে বেনাপোলে শক্তিশালী সিন্ডিকেট

নজরুল ইসলাম, বেনাপোল (যশোর)

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২১, ০২:২১ পিএম

বেনাপল স্থল বন্দর, যশোর

বেনাপল স্থল বন্দর, যশোর

সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিতে বেনাপোল বন্দরভিত্তিক একটি বহিরাগত শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এ সিন্ডিকেটটি। 

ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় গড়ে ওঠা রানা নামে এক চোরাচালানীর নিয়ন্ত্রণে বেনাপোল বন্দরের আশপাশে বেশ ক’জন চিহ্নিত প্রভাবশালী এই সিন্ডিকেটটি পরিচালনা করছেন। সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির বেশ কটি ঘটনা কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। সিন্ডিকেটটি ভারত থেকে আমদানিকৃত বৈধ পণ্যের ভারতীয় ট্রাকে অবৈধ পণ্য তুলে দিচ্ছে। যার কোনো বৈধ কাগজপত্র থাকছে না। পরে অবৈধ পণ্যগুলো বন্দরের বিভিন্ন শেডে কৌশলে আনলোড করে রাতের আঁধারে বন্দর থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। 

প্রতিনিয়ত এভাবে মাদকদ্রব্য, শাড়ি, থ্রিপিস, ওষুধ, প্রসাধন সামগ্রীসহ বিভিন্ন উচ্চ শুল্ক হারের পণ্য বৈধ পণ্যের ট্রাকে করে এনে পাচার করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে বন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন। বৈধ পণ্যের সঙ্গে আনা এসব অবৈধ পণ্যের বিষয়ে আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা কিছুই জানেন না; কিন্তু কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে দায়ী করে তাদের লাইসেন্স বাতিল করছেন। ফলে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তারাও এ ধরনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি করেছেন। 

গত ১৫ এপ্রিল ভারত থেকে শিল্প কলকারখানার কাঁচামালের একটি ভারতীয় ট্রাকে মদ, শাড়ি, থ্রিপিস, কসমেটিকসসহ বিভিন্ন পণ্য তুলে দেওয়া হয়। পরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গোপন সংবাদ পেয়ে ডব্লিউ বি-২০-১৮৯০ নম্বরের ট্রাকটি আটক করে। দায়ী করা হয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে। গত ২৭ জুলাই এয়ার এন্টারপ্রাইজ নামে একজন আমদানিকারক ভারত থেকে ৩০০ কাটর্ন ব্লিন্ডার আমদানি করেন। রানা সিন্ডিকেটের সদস্যরা ওপার থেকে ভারতীয় ট্রাক ডব্লিউ-বি-৮৭-১০৮৮ তে ২৭ কার্টন শাড়ি, থ্রিপিস, ওষুধ,ও প্রসাধনসামগ্রী তুলে দেয়। গোপন সংবাদ পেয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ট্রাকটি বন্দরে ঢোকার সময় আটক করে। পরে ট্রাকটি তল্লাশি করে তার মধ্যে ২৭ কার্টন অবৈধ পণ্য জব্দ করে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আনোয়ার এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্সটি সাময়িক বাতিল করেন। 

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সিন্ডিকেটের সঙ্গে আমাদের কোনো কর্মকর্তা জড়িত কিনা আমার জানা নেই। তবে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh