মধ্যরাত থেকে মাছ ধরা শুরু হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদে

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২১, ০৯:০১ পিএম

কাপ্তাই হ্রদ

কাপ্তাই হ্রদ

দীর্ঘ চার মাস রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে আহরণ। মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে হ্রদে জাল নিয়ে নেমেছেন দীর্ঘ চার মাস অলস সময় কাটানো জেলেরা। এদিকে হ্রদে মাছ ধরা শুরু হওয়ায় আবারো কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতিবছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস সব ধরনের মাছ শিকার, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলাপ্রশাসন। এ বছরও একইভাবে নিষেধাজ্ঞার সময় তিনমাস দেয়া হলেও হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় তিন দফায় আরো এক মাস হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে নিবন্ধিত জেলেরা প্রতিমাসে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য হিসেবে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা পান। তবে এবার নিয়মতান্ত্রিক নিষেধাজ্ঞা তিন মাসে জেলেরা খাদ্য সহায়তা পেলেও বাড়তি এক মাসের খাদ্য সহায়তা পাননি।

বিএফডিসি সূত্র জানায়, গত বছরও কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ ধরা বন্ধকালীন নির্ধারিত সময়ে পানি না বাড়ায় ১ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিন নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু ১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে পানিস্বল্পতার মধ্যেই মাছ আহরণ শুরু হয়ে যায়। এতে করে মৌসুমের শুরুর দিকে মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরিত হলেও শেষের দিকে হ্রদে তেমন মাছ পাওয়া যায়নি। এতে করে ভাটা পড়েছে বিএফডিসির বার্ষিক মাছ আহরণ ও অবতরণের রেকর্ডে। 

বিএফডিসির বার্ষিক হিসাব বলছে, কাপ্তাই হ্রদ হতে বিএফডিসির অবতরণকেন্দ্রে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭৬৭২ টন; ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭৯৮১ টন; ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮১২৩; ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৪২৩ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৫৪৯ টন মাছ অবতরণ করা হয়। সেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে অবতরণ হয়েছে ৬৭৯৪ টন। এবছরও যদি গত মৌসুমের মতো মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরিত হয়; তাহলে মৌসুমের শেষের দিকে মাছ আহরণে ভাটা পড়বে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি বিপণনকেন্দ্রের সহকারী বাজারজাতকরণ কর্মকর্তা মো. শোয়েব সালেহীন জানান, দীর্ঘ চার মাস পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হচ্ছে। বুধবার ভোর থেকেই বিএফডিসির নিজস্ব পল্টনগুলোতে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে মাছ নিয়ে আসবেন জেলেরা। সেখান যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করা হবে। 

তিনি আরো জানান, স্বাভাবিক সময়ের হিসাবে কাপ্তাই হ্রদের পানির পরিমাণ ১০৫ এমএসএল (মীনস্ সী লেভেল) হলে মাছ ধরা শুরু হয়। কিন্তু এবছরও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে নির্ধারিত তিনমাস সময়ে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় তিন দফায় আরো একমাস সময় বৃদ্ধি করা হলেও হ্রদে এখনো আশানুরূপ পানি বাড়েনি। বর্তমানে হ্রদের পানির পরিমাণ ৯৮ দশমিক ০৪ এমএসএল; যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৭ এমএসএল কম। কিন্তু জেলে ও ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক অবস্থা ও পারিপার্শ্বিক নানাদিক বিবেচনায় পানিস্বল্পতার মাঝেই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh