বিদেশগামীদের টিকা নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:৫৮ পিএম

টিকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

টিকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

বিদেশগামীদের দ্রুত টিকা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) গ্রেফতার করেছে এমন প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল এলাকা থেকে সন্ধ্যায় র‍্যাব-৩ আটক করে মো. নুরুল হক, সাইফুল ইসলাম, ইমরান হোসেন ও দুলাল মিয়া নামে চারজনকে। তারা বিভিন্নজনকে দ্রুত টিকা পেতে সহযোগিতা করার নামে টাকা আদায় করছিলেন।

র‍্যাব জানায়, সাধারণত বিদেশগামীদের করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণে বাধ্যবাধকতা ও তাড়া থাকে। তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ পর্যায়ে থাকে অথবা টিকিট কাটা থাকে। তাদের টিকা গ্রহণে তাড়ার সুযোগে চক্রটি হাতিয়ে নেয় টাকা।

প্রতারকদের নেতা নুরুল অনেক দিন বিদেশে ছিলেন। ইমরান চাকরি করেন একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে। সাইফুল চা বিক্রি করেন রমনা থানা এলাকায়। দুলাল মিয়া একটি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক। প্রতারকরা মুগদা, শাহবাগ, রমনা, শেরেবাংলা নগর, মিরপুর, মহাখালীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয়।

প্রতারকদের মধ্যে দুইজন সরকারি প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ছিলেন, সে জন্য তাদের কিছু যোগাযোগ তৈরি হয়। এমন সম্পর্ক ব্যবহারে তারা ১০-১৫ জনের এসএমএস দ্রুত পাঠাতে পেরেছে।

প্রতারক চক্রের হোতা নুরুল হককে আটক করা হয়েছে। তার মাধ্যমে জানা গেছে প্রতারণার কৌশল ও দলের সদস্যদের ব্যাপারে তথ্য। আটক সাইফুল ও ইমরান হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে বিদেশগামীদের প্রলোভন দেখান। এরপর তাদের শর্তে রাজি হলে নেয়া হয় নুরুল হকের কাছে। পরে টাকার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে দুলাল চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি দেন বিদেশগামীদের।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন প্রতারণার এ ঘটনায় বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের টিকাদানে সরকার সাতটি হাসপাতাল নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রতারকরা এসব হাসপাতালের সামনে ঘোরাফেরা করতে থাকে। দ্রুত টিকা পেতে যখন প্রবাসীরা সেসব হাসপাতালে যোগাযোগ করেন, তখন প্রতারকরা তাদের টার্গেট করে। টিকার প্রক্রিয়া দ্রুত করাতে তারা টাকা দাবি করে। স্বাভাবিক নিয়মেই অনেকে টিকার মেসেজ দ্রুত পেয়ে যান, কিন্তু তার কৃতিত্ব নেয় প্রতারকরা। কয়েকটি ক্ষেত্রে তারা তদবির করেছে বলেও তথ্য মিলেছে।

‘যারা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু এসএমএস পাননি, তাদের এক দিনের মধ্যে টিকার ব্যবস্থা করা হবে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালায় প্রতারক চক্রটি। আবার হাসপাতালের সামনে গিয়েও নানা ধরনের কথা বলে বিদেশগামীদের বিভ্রান্ত করে তারা।’

কমান্ডার মঈন বলেন, ‘যারা টিকা অথবা এসএমএস পেয়েছেন, তারা করেননি। কিন্তু টাকা দিয়েও যারা এসএমএস পাননি তাদের মধ্যে অনেকে র‍্যাবের কাছে অভিযোগ করেছেন। প্রতারণার শিকার প্রায় ২০০ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতারকরা আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করেছে।’

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh